বিষয়বস্তুতে চলুন

টোকিও

স্থানাঙ্ক: ৩৫°৪২′২″ উত্তর ১৩৯°৪২′৫৪″ পূর্ব / ৩৫.৭০০৫৬° উত্তর ১৩৯.৭১৫০০° পূর্ব / 35.70056; 139.71500
এই পাতাটি অর্ধ-সুরক্ষিত। শুধুমাত্র নিবন্ধিত ব্যবহারকারীরাই সম্পাদনা করতে পারবেন।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Tokyo থেকে পুনর্নির্দেশিত)
টোকিও (তৌকিঔ)
東京
অতিমহানগরী
東京都
উপরে বামদিক থেকে: নিশি শি-ঞ্জুকু, তোক্যো তাউয়া, রেইনবও ব্রিজ, শিবুয়া, দায়েত বিলদিং
জাপানের মধ্যে টোকিওর অবস্থান
জাপানের মধ্যে টোকিওর অবস্থান
নাসার ল্যানসেট ৭ উপগ্রহের তোলা তৌক্যৌর ২৩টি বিশেষ ওয়ার্ডের চিত্র
নাসার ল্যানসেট ৭ উপগ্রহের তোলা তৌক্যৌর ২৩টি বিশেষ ওয়ার্ডের চিত্র
টোকিও (তৌকিঔ) জাপান-এ অবস্থিত
টোকিও (তৌকিঔ)
টোকিও (তৌকিঔ)
জাপানের মধ্যে টোকিওর অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ৩৫°৪২′২″ উত্তর ১৩৯°৪২′৫৪″ পূর্ব / ৩৫.৭০০৫৬° উত্তর ১৩৯.৭১৫০০° পূর্ব / 35.70056; 139.71500
রাষ্ট্র জাপান
Regionকান্তৌ
দ্বীপহনশু
Divisions23 special wards, 26 cities, 1 district, & 4 subprefectures
সরকার
 • ধরনMetropolis
 • Governorকোইকে ইউরিকো
 • রাজধানীShinjuku 
আয়তন(ক্রমানুসারে ৪৫তম)
 • মোট২,১৮৭.০৮ বর্গকিমি (৮৪৪.৪৪ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (1st)
 • মোট১,৩০,১০,২৭৯ (April ১st ২,০১০)
 • জনঘনত্ব৫,৮৪৭/বর্গকিমি (১৫,১৪০/বর্গমাইল)
 • ২৩টি ওয়ার্ড৮৬,৫৩,০০০
 (April 1, 2010)
সময় অঞ্চলJapan Standard Time (ইউটিসি+9)
ISO 3166-2JP-13
ফুলSomei-Yoshino সোমেই-ইয়োশিনো
বৃক্ষGinkgo tree (Ginkgo biloba)
পক্ষীBlack-headed Gull (Larus ridibundus)
ওয়েবসাইটmetro.tokyo.jp(ইংরেজি)
টোকিও মহানগর সরকারী ভবন

টোকিও বা স্থানীয় জাপানি উচ্চারণে তৌকিঔ[টীকা ১] (জাপানি ভাষায়: 東京 তৌক্যৌ) পূর্ব এশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র জাপানের বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। সরকারীভাবে এটি তৌকিঔ-তো (東京都) অর্থাৎ টোকিও মহানগরী নামে পরিচিত। এটিকে জাপানের ৪৭টি জেলার একটি হিসেবে গণ্য করা হয়।[][] টোকিও বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলির একটি। এর আয়তন প্রায় ২৪০ বর্গকিলোমিটার। মূল শহরে প্রায় ৯০ লক্ষ লোকের বাস। বৃহত্তর টোকিও মহানগর এলাকাতে প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ লোকের বাস, যা জাপানের মোট জনসংখ্যার এক দশমাংশ; এটি বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল বৃহত্তর মহানগর এলাকা।[] টোকিও থেকে বন্দরনগরী ইয়োকোহামা পর্যন্ত অঞ্চলটি অবিচ্ছিন্নভাবে জন-অধ্যুষিত বলে কিছু বিশেষজ্ঞ টোকিও-ইয়োকোহামাকে একটিমাত্র মহানগর এলাকা হিসেবে গণ্য করেন, যার জনসংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৮০ লক্ষ।

টোকিও শহরটি জাপানি দ্বীপপুঞ্জের মূল চারটি দ্বীপের মধ্যে বৃহত্তম হোনশু দ্বীপের পূর্বপার্শ্বে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের মাঝামাঝি অবস্থানে, টোকিও উপসাগরের মাথায় অবস্থিত। শহরটি জাপানের বৃহত্তম সমভূমি অঞ্চল কানতৌ সমভূমির দক্ষিণাংশের সিংহভাগ এলাকাতে, মূলত কিছু পলিময়, নিচু সমভূমি এবং এর সংলগ্ন কিছু পাহাড়ি উচ্চভূমির উপর উপর দাঁড়িয়ে আছে। টোকিওর জলবায়ু আর্দ্র উপক্রান্তীয় ধরনের। এখানে গ্রীষ্মকালগুলি উষ্ম ও আর্দ্র এবং শীতকালগুলি মৃদু হয়। গ্রীষ্ম ও শরতের শুরুতে বৃষ্টিপাত হয়। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে সাধারণত দুই-তিনটি তাইফুন ঘূর্ণিঝড় হয়।

টোকিও এখন যেখানে অবস্থিত, সেখানে প্রাচীন যুগ থেকেই জনবসতি ছিল। বহু শতাব্দী ধরেই এখানে মৎস্যশিকারীদের একটি ক্ষুদ্র গ্রাম বিদ্যমান ছিল, যার নাম ছিল এদো। জাপানের ইতিহাসের তোকুগাওয়া শোগুনাতে শাসনামলে (১৬০৩-১৮৬৭) এদো গ্রামটি শহরে পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত শোগুনদের রাজধানী হয়ে যায়। তবে জাপান সম্রাটের পরিবার তখনও প্রাচীন সাম্রাজ্যিক রাজধানী কিয়োটো বা কিঔতো শহরেই বাস করতেন। ১৮৬৮ সালে মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার সময় কিয়োটো শহর থেকে দেশ শাসনকারী তোকুগাওয়া রাজবংশ (১৬০৩-১৮৬৭) ক্ষমতাচ্যুত হয়, শোগুনাতের পতন ঘটে এবং সাম্রাজ্যের রাজধানীকে এদোতে সরিয়ে নেওয়া হয়। ঐ বছরেই শহরটির আদি নাম “এদো” থেকে বদলে টোকিও রাখা হয়। “টোকিও” শব্দের অর্থ “পূর্বদিকের রাজধানী”। টোকিওতে নাম বদল হবার আগেই ১৭শ শতক থেকেই এদো জাপানের বৃহত্তম শহর ছিল। ১৯শ শতকের শেষে এসে শহরটির জনসংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। ১৯৪৩ সালে প্রাক্তন তৌকিঔ-ফু (東京府) অর্থাৎ টোকিও জেলা এবং তৌকিঔ-শি (東京市) অর্থাৎ টোকিও শহর - এই দুইটিকে একত্রিত করে তৌকিঔ-তো (東京都) অর্থাৎ টোকিও মহানগরী গঠন করা হয়। টোকিও তাই শহর ও জেলার মাঝামাঝি একটি বিশেষ প্রশাসনিক বিভাগ। টোকিও মহানগর সরকার মূল টোকিও শহরের ২৩টি বিশেষ এলাকা, এদের পশ্চিমে অবস্থিত ৩০টি পৌরসভা এবং টোকিও উপসাগরে অবস্থিত ২টি দ্বীপপুঞ্জকে পরিচালনা করে।

বর্তমানে টোকিও জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য, শিল্প, শিক্ষা ও সংস্কৃতির কেন্দ্র। এছাড়া শহরটি বহির্বিশ্বের সাথে বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জাপানের প্রধান সংযোগ বিন্দু। টোকিও শহরের কেন্দ্রে বহু দেশী ও আন্তর্জাতিক আর্থ-বাণিজ্যিক সংস্থা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর অবস্থিত। শহরটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পাইকারি বাজারকেন্দ্র; জাপানের সব জায়গা থেকে এবং বিদেশ থেকেও বিভিন্ন পণ্যদ্রব্য টোকিওতে এসে পৌঁছায় এবং এখান থেকে সেগুলিকে বণ্টন-বিতরণ করা হয়। টোকিও শহরটি বৃহত্তর কেইহিন শিল্প এলাকার অন্তর্গত। এই শিল্প এলাকাটি টোকিও উপসাগরের পশ্চিম তীরে কেন্দ্রীভূত এবং জাপানের প্রধানতম শিল্পোৎপাদন অঞ্চল। টোকিওতে প্রচুর ক্ষুদ্র ও শ্রমনির্ভর কলকারখানা আছে, যাদের মধ্যে ছাপাখানা, প্রকাশনী শিল্প এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির কারখানাগুলি উল্লেখযোগ্য ২০১১ সালে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ৫০০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের (ফরচুন গ্লোবাল ৫০০) ৫১টি টোকিওতে অবস্থিত ছিল, যা বিশ্বের যেকোন শহরের মধ্যে সর্বোচ্চ।[] টোকিও আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্রসমূহের উন্নয়ন সূচকে দুইবার তৃতীয় স্থান লাভ করেছে। এছাড়া শহরটি বিশ্ব অর্থনৈতিক শক্তি সূচকে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। টোকিও মহানগরীর অর্থনীতি বিশ্বের বৃহত্তম নগর অর্থনীতি। ক্রয়ক্ষমতার সমতার বিচারে টোকিওর মোট আভ্যন্তরীণ উৎপাদন ১.৬ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার। টোকিও যদি একটি দেশ হত, তাহলে এটি বিশ্বের ১৫তম সর্ববৃহৎ অর্থনীতি হত।[]

মূল টোকিও শহরটি ২৩টি বিশেষ প্রশাসনিক এলাকা নিয়ে গঠিত। জাপানের রাজকীয় প্রাসাদটি টোকিও শহরের হৃৎকেন্দ্রে অবস্থিত। প্রাসাদটি পাথরের প্রাচীর, পরিখা ও প্রশস্ত বাগান দিয়ে পরিবেষ্টিত। রাজপ্রাসাদের পূর্ব-দিক সংলগ্ন বর্ণিল মারুনোউচি এলাকাটি জাপানি ব্যবসা-বাণিজ্যের একটি প্রধান কেন্দ্র। প্রাসাদের দক্ষিণে আছে কাসুমিগাসেকি এলাকাটি, যেখানে বহু জাতীয় পর্যায়ের সরকারী কার্যালয় অবস্থিত। তার পশ্চিমে রয়েছে নাগাতাচো এলাকা, যেখানে জাপানের জাতীয় “দিয়েত” বা সংসদ ভবনটি অধিষ্ঠিত। টোকিওতে কোনও কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকা নেই। শহরটি অনেকগুলি গুচ্ছ গুচ্ছ শহুরে এলাকা নিয়ে গঠিত; এই এলাকাগুলি মূলত রেল স্টেশনগুলিকে ঘিরে গড়ে উঠেছে, যেখানে দোকান, বিপণীবীথি, হোটেল, ব্যবসায়িক কার্যালয় ভবন এবং রেস্তোরাঁগুলি ঘন সন্নিবিষ্ট হয়ে অবস্থান করছে। এই গুচ্ছগুলির মাঝে মাঝে অপেক্ষাকৃত কম ভবনবিশিষ্ট অনাধুনিক এলাকাগুলি অবস্থিত, যদিও এগুলিতেও একই ধরনের ভবনের দেখা মেলে। টোকিওর ভবনগুলি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। এখানে এখনও প্রাচীন জাপানি কাঠের বাড়ির দেখা মেলে, যদিও এদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে আসছে। এছাড়া এখানে মেইজি পর্বে (১৮৬৮-১৯১২) নির্মিত অনেক পাথর ও ইটের তৈরি ভবন আছে। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরে শহরে কংক্রিট ও ইস্পাত দিয়ে অনেক গগনচুম্বী অট্টালিকা নির্মাণ করা হয়। শহরকেন্দ্রের পূর্বভাগে অবস্থিত আলোয় ঝলমল করা গিনজা নামক কেনাকাটার এলাকাটি বিশ্বখ্যাত। রাজপ্রাসাদের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত কান্দা এলাকাটিতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়, বইয়ের দোকান ও প্রকাশনী অবস্থিত। টোকিওর নগর-উদ্যানগুলি ইউরোপ-আমেরিকার মত বড় না হলেও সংখ্যায় প্রচুর এবং এগুলিতে প্রায়ই মনোরম সুদৃশ্য জাপানি ধাঁচের বাগান থাকে।

টোকিও জাপানের প্রধানতম সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। টোকিও শহরে অত্যাধুনিক জীবনধারার সাথে ঐতিহ্যের সংমিশ্রণ ঘটেছে। এখানে নিয়নের আলোয় উদ্ভাসিত গগনস্পর্শী অট্টালিকা যেমন আছে, তেমনই আছে ঐতিহাসিক সব মন্দির। সমৃদ্ধ মেইজি শিন্তো তীর্থস্থলটি এর সুউচ্চ প্রবেশদ্বার এবং চারপাশ ঘিরে থাকা বৃক্ষশোভিত এলাকার জন্য পরিচিত। উয়েনো নগর-উদ্যান এলাকাতে টোকিও জাতীয় জাদুঘরে জাপান ও এশিয়ার ধ্রুপদী শিল্পকলা ও ইতিহাস বর্ণনাকারী অনেক প্রদর্শনী আছে। একই এলাকাতে একটি বিজ্ঞান জাদুঘর, একটি চিড়িয়াখানা এবং দুইটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকলা জাদুঘর অবস্থিত। রাজপ্রাসাদের আশেপাশেও বেশ কিছু বিজ্ঞান ও শিল্পকলা জাদুঘর আছে। এছাড়া শহর জুড়েই অন্যান্য আরও অনেক ধরনের জাদুঘর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এদো-টোকিও জাদুঘরে পুনর্নির্মিত কাবুকি নাট্যমঞ্চ পরিদর্শন করা সম্ভব। টোকিওর নাট্যশালাগুলিতে নিয়মিতভাবে ঐতিহ্যবাহী কাবুকি নাটকের পাশাপাশি আধুনিক নাটক পরিবেশন করা হয়। এছাড়া ঐকতান, গীতিনাট্য, ইত্যাদি পাশ্চাত্য ধ্রুপদী সঙ্গীত ও নৃত্যকলা সর্বদাই পরিবেশিত হয়। শহরটিতে ফুজি টিভি, টোকিও এমএক্স, টিভি টোকিও, টিভি আসাহি, নিপ্পন টেলিভিশন, এন এইচ কে এবং টোকিও ব্রডকাস্টিং সিস্টেম নামক টেলিভিশন নেটওয়ার্কগুলি বিদ্যমান। টোকিও মহানগর এলাকাতে জাপানের অনেকগুলি প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত; এদের মধ্যে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আসাসুকা এলাকার পুরাতন, সরু রাস্তাগুলি দিয়ে হাঁটলে দোকানপাট, কিমোনো-পরিহিতা নারী ও ৭ম শতকে নির্মিত সেনসৌ-জি বৌদ্ধ মন্দিরটি চোখে পড়বে। এর বিপরীতে রোপ্পোনগি এলাকাতে গেলে উদ্দাম উচ্ছল নৈশক্লাব ও কারাওকে গান গাওয়ার বার দেখা যাবে। আখিবারা এলাকায় পাওয়া যাবে অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক প্রযুক্তির দোকানের সমাহার। মদ্যপান করার জন্য ইজাকায়া নামের ঘরোয়া জাপানি ধাঁচের পাবগুলি টোকিওর সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। শহরের কেন্দ্রের কাছে আছে সুকিজি মাছের বাজার, যেটি টুনা মাছের নিলামের জন্য বিখ্যাত। সুউচ্চ টোকিও স্কাইট্রি টাওয়ার নামক স্থাপনার শীর্ষে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত পর্যবেক্ষণ মঞ্চ থেকে গোটা টোকিও শহরের বিস্তৃত পরিদৃশ্য অবলোকন করা সম্ভব। টোকিওর খাবারের দোকানগুলি সবসময়ই জমজমাট থাকে। শিবুইয়াহারাজুকু এলাকাতে গেলে হালের কিশোর-কিশোরীদের পোশাকশৈলী সম্বন্ধে ভাল ধারণা পাওয়া যায়।

টোকিও জাপানের পরিবহনের প্রধান কেন্দ্র। এছাড়া এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক পরিবহন কেন্দ্র। বৈদ্যুতিক রেল, পাতালরেল, বাস ও মহাসড়কের এক ঘনসন্নিবিষ্ট জালিকা টোকিওর সেবায় নিয়োজিত। টোকিও রেল স্টেশনটি সমগ্র জাপানের জন্য কেন্দ্রীয় রেল স্টেশন; পশ্চিম জাপানের উচ্চগতিসম্পন্ন শিনকানসেন রেলগাড়িগুলিও এখান দিয়ে যায়। টোকিও থেকে উত্তর জাপান অভিমুখী সমস্ত রেললাইনগুলি উয়েনো স্টেশনে এসে মিলেছে। অন্যদিকে মধ্য হনশু এবং টোকিওর পশ্চিমের শহরতলীগুলি থেকে আগত রেলগাড়িগুলির শেষ গন্তব্যস্থল হল টোকিওর শিনজুকু রেল স্টেশন। বেশ কিছু বেসরকারী মালিকানাধীন বৈদ্যুতিক রেলপথ আন্তঃনগরী পরিবহন সেবা দান করে। টোকিওর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি চিবা জেলার নারিতা শহরে অবস্থিত। অন্যদিকে টোকিও উপসাগরের কাছে অবস্থিত হানেদা বিমানবন্দরটি আভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহন সেবা প্রদান করে।

টোকিও সারা বছরই ব্যস্ত থাকে। জানুয়ারির ১ তারিখে গ্রেগরিয়ান মতে নববর্ষ উদ্‌যাপন করা হয়; এসময় সমাধিমন্দিরগুলিতে অনেক তীর্থযাত্রীর ভিড় হয়। এপ্রিলে সারা টোকিও শহর জুড়ে চেরি ফুল ফোটার উৎসব পালিত হয়। মে মাসে সানজা মাৎসুরি উৎসব পালিত হয়, যেখানে বহনযোগ্য সমাধির শোভাযাত্রা হয়। জুলাই মাসে সুমিদা নদীর আতশবাজি উৎসব হয়। আগস্ট মাসে ওবোন নামে একটি বৌদ্ধ ছুটির দিবসে পূর্বপুরুষদের স্মরণ করা হয়। একই মাসে আওয়া ওদোরি উৎসবে কোয়েঞ্জি রেলস্টেশনের আশেপাশে শোভাযাত্রা-মিছিলের আয়োজন করা হয়।

২০১৪ সালে ট্রিপঅ্যাডভাইজর নামক পর্যটকদের সহায়তাকারী ওয়েবসাইটে "স্থানীয়দের সাহায্যদানকারী মনোভাব", "নৈশজীবন", "কেনাকাটা", "স্থানীয় গণপরিবহন" এবং "রাস্তাঘাটের পরিচ্ছন্নতা"-র ক্ষেত্রে "শ্রেষ্ঠ সামগ্রিক অনুভূতি"-র বিচারে টোকিও শহর বিশ্বের সেরা শহরের মর্যাদা পায়।[]

শব্দতত্ত্ব

টোকিও
তৌকিও কাঞ্জি বর্ণমালায়
জাপানি নাম
কাঞ্জি 東京
হিরাগানা とうきょう
কিউজিতাই 東亰

টীকা

  1. এই জাপানি ব্যক্তিনাম বা স্থাননামটির বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় জাপানি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ শীর্ষক রচনাশৈলী নিদের্শিকাতে ব্যাখ্যাকৃত নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র

  1. http://houseikyoku.sangiin.go.jp/column/column081.htm "There is no laws to define where Japan's capital is. Because Tokyo was built to stabilize East and North." the Legislative Bureau House of Councillors
  2. "Japan's Local Government System"। Tokyo Metropolitan Government। আগস্ট ১১, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৫, ২০১৩ 
  3. "World Urbanization Prospects: The 2014 Revision Population Database"। United Nations। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১০, ২০১৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. Fortune"Global Fortune 500 by countries: Japan"। CNN। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২২, ২০১১ 
  5. Richard Florida (মার্চ ১৬, ২০১৭), The Economic Power of Cities Compared to Nations, Citylab 
  6. "Tokyo Tops Among Global Travelers, According To TripAdvisor World City Survey"TripAdvisor। TripAdvisor LLC। মে ২০, ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১, ২০১৪