বিষয়বস্তুতে চলুন

অমৃতা প্রীতম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অমৃতা প্রীতম
জন্ম(১৯১৯-০৮-৩১)৩১ আগস্ট ১৯১৯
গুজরানওয়ালা, পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু৩১ অক্টোবর ২০০৫(2005-10-31) (বয়স ৮৬)
দিল্লি, ভারত
পেশাঔপন্যাসিক, কবি, প্রাবন্ধিক
জাতীয়তাভারতীয়
সময়কাল১৯৩৬-২০০৪
ধরনকবিতা, গদ্য, আত্মজীবনী
বিষয়ভারত বিভক্তি, নারী, স্বপ্ন
সাহিত্য আন্দোলনরোমান্টিকতা-প্রগতিবাদ
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিপিঞ্জর (উপন্যাস)
আজ আখান ওয়ারিস শাহ নু (কবিতা)

অমৃতা প্রীতম (পাঞ্জাবি:ਅੰਮ੍ਰਿਤਾ ਪ੍ਰੀਤਮ) (৩১ আগস্ট, ১৯১৯ - ৩১ অক্টোবর, ২০০৫) একজন ভারতীয় লেখিকা ছিলেন।[] তাকে প্রথম উল্লেখযোগ্য পাঞ্জাবি মহিলা কবি, ঔপন্যাসিক ও প্রবন্ধকার হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। বিংশ শতাব্দীর এই কবি ভারত-পাকিস্তানের সীমান্তের উভয় দিকের মানুষেরই প্রিয়পাত্র ছিলেন। ছয় দশকের দীর্ঘ সময় ধরে তিনি কবিতা, কল্পকাহিনী, জীবনী, প্রবন্ধ, লোক সঙ্গীত প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় দুইশোটি গ্রন্থ রচনা করেন, যা বিভিন্ন ভারতীয় ও বিদেশী ভাষায় অনূদিত হয়।[][]

তিনি অজ্জ আখাঁ ওয়ারিস শাহ নূ নামক একটি বিষাদধর্মী কবিতা রচনা করেন, যেখানে ভারতের বিভক্তির সময়কার বিপর্যয়ের প্রতি তার ক্ষোভ ও রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ঔপন্যাসিক হিসেবে তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান হল পিঞ্জর নামক একটি বিখ্যাত উপন্যাস, যেখানে তিনি পারো নামক একটি স্মরণীয় চরিত্র সৃষ্টি করেন, যাকে তিনি নারীদের বিরুদ্ধে অত্যাচার, মানবতা লঙ্ঘন এবং অস্তিত্ববাদের প্রতি সমর্পণের বিরুদ্ধে একটি মূর্ত প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলেন। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে এই উপন্যাস থেকে পিঞ্জর নামক একটি হিন্দি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।[][]

১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তার রচিত সুনেহে নামক দীর্ঘ কবিতার জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন।[] ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তার কাগজ তে ক্যানভাস নামক উপন্যাসের জন্য জ্ঞানপীঠ পুরস্কার জয় করেন। ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পদ্মশ্রী, ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মবিভূষণসাহিত্য অকাদেমি ফেলোশিপ লাভ করেন।[]

জীবনী

[সম্পাদনা]

অমৃতা কউর ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালা নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন।[] তার পিতা কর্তার সিং হিতকরি ব্রজ ভাষার একজন পণ্ডিত, বিদ্যালয়ের শিক্ষক[][] ও শিখ ধর্মের একজন প্রচারক ছিলেন।[১০] অমৃতার বয়স যখন এগারো বছর বয়স, তখন তারা মাতার মৃত্যু হয়। এরপরেই তিনি ও তার পিতা লাহোর শহরে বসবাস শুরু করেন। মাতার মৃত্যুর পরে একাকীত্বের কারণে তিনি লিখতে শুরু করেন। ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ অমৃত লেহরেঁ প্রকাশিত হয়। এই বছর তিনি প্রীতম সিং নামক একজন সম্পাদককে বিবাহ করেন ও স্বামীর নামে নিজের নাম পরিবর্তন করে অমৃতা প্রীতম রাখেন।[১১]

একজন রোমান্টিক কবি হিসেবে লেখা শুরু করলেও শীঘ্রই তিনি অঞ্জুমন তরক্কি পসন্দ মুসান্নাফিন-এ-হিন্দ নামক প্রগতিশীল লেখক সংঘে যোগ দেন,[] যার ফলশ্রুতিতে ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তার লোক পীড় নামক বিখ্যাত গ্রন্থটি রচিত হয়, যেখানে পঞ্চাশের মন্বন্তরের পরে যুদ্ধ বিধ্স্ত অর্থনীতিকে সরাসরি সমালোচনা করা হয়। ভারতের স্বাধীনতার পরে তিনি লাহোর থেকে ভারতে চলে আসেন। স্বাধীনতার পরে দিল্লি শহরে গুরু রাধা কিষণ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত প্রথম জনতা গ্রন্থাগার নির্মাণে তিনি সহায়তা করেন।[১২] ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে তার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এই সময় কবি সাহির লুধিয়ানভির সঙ্গে তার প্রণয় ঘটে,[১৩] কিন্তু পরে কণ্ঠশিল্পী সুধা মালহোত্রার সঙ্গে সাহিরের প্রেম গড়ে উঠলে অমৃতা লেখক ইমরোজের সান্নিধ্যে জীবনের শেষ চল্লিশ বছর অতিবাহিত করেন।[১৪][১৫]

দীর্ঘ রোগভোগের পর ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩১শে ডিসেম্বর, ছিয়াশি বছর বয়সে নতুন দিল্লি শহরে অমৃতার মৃত্যু ঘটে।[১৬]

গ্রন্থপঞ্জি

[সম্পাদনা]

ছয় দশকেরও বেশি সময়ব্যাপী তাঁর কর্মজীবনে তিনি ২৮টি উপন্যাস, ১৮টি গদ্যের সংকলন, ৫টি ছোটোগল্প এবং ১৬টি বিবিধ গদ্য রচনা করেছেন।

উপন্যাস

[সম্পাদনা]
প্রকাশকাল উপন্যাস
পিঞ্জর
ডক্টর দেব
কোরে কাগজ, উনচাশ দিন
ধরতি, সাগর অর সেপিয়ান
রং কা পাত্তা
দিল্লি কি গলিয়ান
তেরহওয়ান সুরাজ
যাত্রী
১৯৬৮ জিলাবতন
হরদত্ত কা জিন্দাগিনামা

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Amrita Pritam, The Black Rose by Vijay Kumar Sunwani, Language in India, Volume 5 : 12 December 2005.
  2. Amrita Pritam – Obituary The Guardian, 4 November 2005.
  3. Amrita Pritam: A great wordsmith in Punjab’s literary history Daily Times (Pakistan), 14 November 2005.
  4. Always Amrita, Always Pritam Gulzar Singh Sandhu on the Grand Dame of Punjabi letters, The Tribune, 5 November 2005.
  5. ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে Pinjar (ইংরেজি)
  6. Amrita Pritam Modern Indian Literature: an Anthology, by K. M. George, Sahitya Akademi. 1992, আইএসবিএন ৮১-৭২০১-৩২৪-৮.945–947.
  7. Sahitya Akademi fellowship for Amrita Pritam, Anantha Murthy ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখে The Hindu, 5 October 2004.
  8. Amrita Pritam Women Writing in India: 600 B.C. to the Present, by Susie J. Tharu, Ke Lalita, published by Feminist Press, 1991. আইএসবিএন ১-৫৫৮৬১-০২৯-৪. Page 160-163.
  9. New Panjabi Poetry ( 1935–47) Handbook of Twentieth-century Literatures of India, by Nalini Natarajan, Emmanuel Sampath Nelson, Greenwood Publishing Group, 1996. আইএসবিএন ০-৩১৩-২৮৭৭৮-৩.Page 253-254.
  10. Kushwant Singh, "Amrita Pritam: Queen of Punjabi Literature", The Sikh Times
  11. Amrita Pritam – Obituary ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ জুলাই ২০১১ তারিখে The Independent, 2 November 2005.
  12. Editorial Daily Times (Pakistan), 2 November 2005.
  13. Sahir Biography Upperstall.com.
  14. Amrita Preetam Imroz : A love Story of a Poet and a Painter ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে Passionforcinema.com, 8 August 2008.
  15. Nirupama Dutt, "A Love Legend of Our Times" Tribune, 5 November 2006.
  16. "Indian writer Amrita Pritam dies"BBC News। ৩১ অক্টোবর ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১২