বিষয়বস্তুতে চলুন

দারিদ্র্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উপরে থেকে নিচে ও ডান থেকে বামে: কানাডার টরন্টো নগরীতে একজন গৃহহীন ব্যক্তি; চীনের বেইজিং নগরীতে একজন ভিক্ষারত শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি; কেনিয়ার দাদাব শহরের কাছে একটি চিকিৎসালয়ে একটি অপুষ্টিতে ভোগা শিশু ও তার মা; ভারতের লখনউ নগরীতে আবর্জনা কুড়ানো শিশু, ২০০৮[]

দারিদ্র্য বলতে বেঁচে থাকার জন্য আবশ্যকীয় প্রয়োজন মেটানোর জন্য অধীনস্থ সম্পদ বা আয়ের অপর্যাপ্ততাকে বোঝায়।[] দারিদ্র্যের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উপাদান থাকতে পারে।

চরম দারিদ্র্য কথাটি দিয়ে মৌলিক ব্যক্তিগত চাহিদা যেমন খাদ্য, বস্ত্র ও আশ্রয়, ইত্যাদি মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক বা অন্য কোনও উপায়ের সম্পূর্ণ অনুপস্থিতিকে নির্দেশ করা হয়।[] চরম দারিদ্র্যের সীমার সংজ্ঞা স্থানকাল নির্বিশেষে সর্বত্র ও সর্বদা একই হয়ে থাকে।

অন্যপক্ষে আপেক্ষিক দারিদ্র্য তখনই ঘটে, যখন কোনও ব্যক্তি কোনও নির্দিষ্ট স্থান-কালের প্রেক্ষিতে অপর ব্যক্তিসমূহের সাপেক্ষে একটি ন্যূনতম জীবনযাত্রার মান অর্জনে ব্যর্থ হয়। এ কারণে আপেক্ষিক দারিদ্র্যের সীমার সংজ্ঞায়ন দেশ ও সমাজভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।[] যেমন কোনও এলাকার প্রায় সবাই যদি আধুনিক ইটনির্মিত বাসায় বাস করে, কিন্তু কোনও ব্যক্তির যদি উন্মুক্ত মাঠে ছোট তাঁবুতে বাস করার চেয়ে বেশি আর্থিক সামর্থ্য না থাকে, তাহলে বলা যায় যে ব্যক্তিটি আপেক্ষিকভাবে দরিদ্র। কিন্তু কোনও যাযাবর সমাজের সবাই যদি মাঠে তাবু গেঁড়ে বাস করে, তাহলে ব্যক্তিটি আপেক্ষিকভাবে দরিদ্র হিসেবে বিবেচিত হবে না।

সরকারী ও বেসরকারী অনেক সংগঠন দারিদ্র্য হ্রাসকরণের প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যে সমস্ত ব্যক্তি যথেষ্ট পরিমাণে আয় করতে অপারগ, তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যোগানের প্রয়াস নেওয়া হয়। কিন্তু দুর্নীতি, কর ফাঁকি, ঋণের বোঝা, ঋণের শর্ত এবং স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাক্ষেত্রের পেশাদারদের মেধা পাচার, ইত্যাদি সীমাবদ্ধতার কারণে দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মকাণ্ডগুলি ব্যহত হয়। মৌলিক চাহিদাগুলিকে আরও সুলভ করার লক্ষ্যে কল্যাণ, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক সেবার যোগানের মত কৌশল অবলম্বন করা হয় যাতে দরিদ্রদের আয় বৃদ্ধি পায়।[]

পরিসংখ্যান

[সম্পাদনা]

২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত মাল্টিডাইমেনশনাল পভার্টি ইনডেক্স অনুযায়ী:

  • চরম দারিদ্র্যে জীবনযাপন করছে বিশ্বজুড়ে ১১০ কোটি মানুষ।
  • ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের মধ্যে ২৩ কোটি ৪০ লাখই চরম দারিদ্র্যে দিনাতিপাত করে।
  • ভারতের পরে রয়েছে পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো। দারিদ্রে দিন কাটানো ১১০ কোটি মানুষের প্রায় অর্ধেক এই পাঁচ দেশের।[]


আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Uttar Pradesh, Poverty, Growth and Inequality" (পিডিএফ)worldbank.orgWorld Bank Group। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৯ 
  2. Poverty। merriam-webster। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৩ 
  3. "Poverty | United Nations Educational, Scientific and Cultural Organization"www.unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৫ 
  4. Sabates, Ricardo (২০০৮)। The Impact of Lifelong Learning on Poverty Reduction (পিডিএফ)IFLL Public Value Paper 1। Latimer Trend, Plymouth। পৃষ্ঠা 5–6। আইএসবিএন 978-1-86201-379-7। ২৮ মে ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. "Causes of Poverty – Global Issues"www.globalissues.org। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৫ 
  6. বিশ্বজুড়ে ১১০ কোটি মানুষ চরম দরিদ্র, অর্ধেকই ভারতে!, কালের কণ্ঠ, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]