নামাজ
নামাজ | |
---|---|
আনুষ্ঠানিক নাম | صلاة |
অন্য নাম | ইসলামে উপাসনা, সালাহ, সালাত |
পালনকারী | মুসলমান |
ধরন | ইসলামি |
তাৎপর্য | আইনশাস্ত্র অনুযায়ী আল্লাহর কাছে মুসলিমদের প্রার্থনা |
পালন | |
সম্পর্কিত | তেলাওয়াত, রুকু, সিজদা |
ইসলাম বিষয়ক ধারাবাহিক রচনার একটি অংশ আকীদা |
---|
১ আহমাদিয়া, কুতুববাদ ও ওয়াহাবিবাদ সহ ২ আলাওয়ি, আসাসিন ও দ্রুজ সহ ৩ আলেভি, বাক্তাশি, কিযিবাশ ও কালান্দারিয়া সহ ৪ আযারিকা, আজারদি, হারুবিয়া, নাজদাত এবং সুফ্রিয়া সহ ইসলাম প্রবেশদ্বার |
নামাজ বা নামায (ফার্সি: نماز) বা সালাত বা সালাহ (আরবি: صلاة) ইসলাম ধর্মের একটি দৈনিক নিয়মিত ইবাদত। একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতে হয় যা কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত আছে। এটি মুসলমানদের জন্য প্রতিদিন অবশ্যকরণীয় একটি ধর্মীয় কাজ। তবে প্রতিদিন আবশ্যকরণীয় বা ফরজ ছাড়াও বিবিধ নামাজ রয়েছে যা সময়ভিত্তিক বা বিষয়ভিত্তিক। ইসলামে ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ না পড়া কবিরা গুনাহ বা বড় পাপ।[১]
সালাত একটি সুনির্দিষ্ট প্রকৃতির ইবাদত যার পদ্ধতি ‘ইসলামী শরী‘আতে পরিপূর্ণভাবে বর্ণিত হয়েছে। নামাজ ‘তাকবিরে তাহরিমা’ দ্বারা শুরু হয় ও ‘সালাম ফিরানো’ দ্বারা শেষ হয়’।[২]
নামাজ (সালাত) ইসলামের পাঁচটি রোকনের মধ্যে দ্বিতীয় রোকন৷ নামাজ প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধি-জ্ঞান সম্পন্ন, নারী পুরুষ নির্বিশেষে, প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ বা অবশ্যকরণীয়।
পবিত্র কুরআনের ৮২ টি আয়াতে বলা হয়েছে সালাত প্রতিষ্ঠা করো।
শব্দতত্ত্ব
[সম্পাদনা]সালাত বা সালাহ (আরবি: صَلاة স্বলাহ্, স্বলাত্, আরবি: الصلاة আস-সালাত, অর্থ "প্রার্থনা", "দোয়া" বা "প্রশংসা"[৩]) -এর আভিধানিক অর্থ দোয়া, রহমত, ক্ষমা প্রার্থনা করা[৪] ইত্যাদি। কোরআনে ইসলামী আনুষ্ঠানিক প্রার্থনা হিসেবে সালাত শব্দটিকেই ব্যবহার করা হয়েছে। আরবি ভাষায় অন্যান্য ধর্মেও এবং ধর্মনিরপেক্ষভাবে প্রার্থনা বা উপাসনা বোঝাতে সালাত শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
নামাজ (ফার্সি: نماز) শব্দটি প্রাচীন ইরান বা পারস্যে প্রচলিত ইন্দো-ইরানীয় আদি আর্য (আর্যদের ভাষা - প্রাচীন বৈদিক ভাষা তথা সংস্কৃতের) ধাতুমূল নমস্ (নমস্কারও একই ধাতুমূল হতে উদ্ভূত) থেকে[৫] ইসলাম পরবতী মধ্যযুগীয় পারস্য বা ইরানে ইসলাম ধর্মের প্রসারের ফলে নিকটবর্তী আরব উপদ্বীপের আরব্য উচ্চারণশৈলীতে বিবর্তিত ও রূপান্তরিত হয়ে ফার্সি ভাষায় প্রবেশকৃত একটি ইসলামী পারিভাষিক শব্দ যা ইসলামী সালাতকে বোঝাতেই মুসলিম ফার্সি সাহিত্যে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে, এবং কালক্রমে মোগল আমলে ব্যবহারক্রমে বাংলা ভাষায় পরিগৃহীত হয়েছে। আরবি ভাষার সালাত শব্দের (আরবি: صلاة, কুরআনিক আরবি:صلاة,) ফারসি প্রতিশব্দ নামাজ, যা প্রায় বিগত এক হাজার বছর ধরে ইরানি ও তুর্কি মুসলিম শাসক ও ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য ভাষার সাথে সাথে বাংলা ভাষাতেও ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। তুর্কিক ও স্লাভীয় ভাষাতেও নামাজ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
লাক ও আভার ভাষাতে, চাক (чак) ও কাক (как) ব্যবহৃত হয়, সালাতের প্রতিশব্দ হিসেবে। মালয়শিয়ায় ও ইন্দোনেশিয়ায়, সোলাত পরিভাষাটি ব্যবহৃত হয়, পাশাপাশি স্থানীয় পরিভাষা, সেমবাহহ্যায়াং ও ব্যবহৃত হয় (অর্থ "উপাসনাকর্ম", সেমবাহ - উপাসনা, ও হ্যায়াং - ঈশ্বর বা দেবতা - শব্দ দুটি থেকে)।[৬]
কিছু মুসলিম আলেম মূল ইসলামী আরবী শব্দ "সালাত" (صَلاة)-এর ব্যবহারকে অধিক উৎসাহিত করে থাকেন, যুক্তি হিসেবে তারা বলেন, সালাত শব্দটি কুরআনে ব্যবহৃত হয়েছে, তাই শব্দটি বলার সময় প্রতি হরফে দশ নেকি করে চার হরফে মোট ৪০ নেকি সাওয়াব পাওয়া যাবে, যা নামাজ বা অন্যান্য অ-কুরআনীয় প্রতিশব্দ উচ্চারণে পাওয়া যাবে না। কুরআনীয় শব্দ বলায় প্রতি হরফে দশ নেকির ক্ষেত্রে তারা ইসলামী নবী মুহাম্মাদের উক্ত হাদীসটি পেশ করেন,
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ الْحَنَفِيُّ، حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ بْنُ عُثْمَانَ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ مُوسَى، قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ كَعْبٍ الْقُرَظِيَّ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ قَرَأَ حَرْفًا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ فَلَهُ بِهِ حَسَنَةٌ وَالْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا لاَ أَقُولُ الم حَرْفٌ وَلَكِنْ أَلِفٌ حَرْفٌ وَلاَمٌ حَرْفٌ وَمِيمٌ حَرْفٌ " . وَيُرْوَى هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَرَوَاهُ أَبُو الأَحْوَصِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَفَعَهُ بَعْضُهُمْ وَوَقَفَهُ بَعْضُهُمْ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . سَمِعْتُ قُتَيْبَةَ بْنَ سَعِيدٍ يَقُولُ بَلَغَنِي أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ كَعْبٍ الْقُرَظِيَّ وُلِدَ فِي حَيَاةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمُحَمَّدُ بْنُ كَعْبٍ الْقُرَظِيُّ يُكْنَى أَبَا حَمْزَةَ .
‘মুহাম্মাদ ইবন বাশশার (রহঃ) .... আবদুল্লাহ্ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করবে তার নেকী হবে। আর নেকী হয় দশ গুণ হিসাবে। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম মিলে একটি হরফ; বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, এবং মীম আরেকটি হরফ।’
উক্ত হাদীসের মান নিয়ে বক্তব্য[৮]:
হাদীসটি এই সূত্রে হাসান সহীহ-গারীব। কুতায়বা ইবন সাঈদ (রহঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ আমার কাছে তথ্য আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশাতেই মুহাম্মাদ ইবন কুরাযী (রহঃ) এর জন্ম হয়েছে। এই হাদীসটি অন্যভাবেও ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত আছে। আবুল আহওয়াস (রহঃ) এটি আবদুল্লাহ্ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে রিওয়ায়ত করেছেন। ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে কোন কোন রাবী এটি মারফূ’রূপে রিওয়ায়ত করেছেন আর কোন কোন রাবী মাওকূফ রূপে রিওয়ায়ত করেছেন। মুহাম্মাদ ইবন কা’ব কুরাযী (রহঃ) এর কুনিয়ত হল আবূ হামযা।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]ইসলামের বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী মুহাম্মাদ (সাঃ) ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন এবং অব্যবহিত পরে
আল্লাহর পক্ষ থেকে সকাল ও সন্ধ্যায় দৈনিক দুই ওয়াক্ত নামাজ মুসলিমদের জন্য ফরজ (আবশ্যিক) হওয়ার নির্দেশনা লাভ করেন। তিনি ৬১৪ খ্রিষ্টাব্দে সকাল, সন্ধ্যা ও দুপুরে দৈনিক তিন ওয়াক্ত নামাজের আদেশ লাভ করেন। ৬১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে রজব তারিখে মিরাজের সময় পাঁচওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। উল্লেখ্য যে, এ সময় যোহর, আসর ও ইশা ২ রাকাত পড়ার বিধান ছিল। ৬২৩ খ্রিষ্টাব্দে আল্লাহর তরফ থেকে ২ রাকাত বিশিষ্ট যুহর, আসর ও ইশাকে ৪ রাকাতে উন্নীত করার আদেশ দেয়া হয়।[৯]
শর্ত
[সম্পাদনা]কারো উপর নামাজ ফরজ বা অবশ্যকরণীয় হওয়ার জন্য শর্তগুলো হলো:–
- মুসলিম হওয়া;
- সাবালক হওয়া
- সুস্থ মস্তিষ্কের (মানুষ) হওয়া।
নিম্নের পাঁচটি কারণ সংঘটিত হলে নামাজ বৈধ হয়।[১০]
- নামাজের ওয়াক্ত সম্পর্কে নিশ্চিত হলে। অনিশ্চিত হলে নামাজ হবে না, যদি তা ঠিক ওয়াক্তেও হয়।[১১]
- কাবামুখী হয়ে দাঁড়ানো। তবে অসুস্থ এবং অপারগ ব্যক্তির জন্য এই শর্ত শিথিলযোগ্য।
- সতর ঢাকা থাকতে হবে। পুরুষের সতর হল নাভির উপর থেকে হাঁটুর নিচ (টাখনুর উপরে) পর্যন্ত, আর নারীর সতর হল মুখমণ্ডল, দুই হাতের কব্জি ও দুই পায়ের পাতা ব্যতীত সারা শরীর।[১২]
- পরিধেয় কাপড়, শরীর ও নামাজের স্থান পরিষ্কার বা পাক-পবিত্র হতে হবে।[১৩]
- অযু, গোসল বা তায়াম্মুমের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে।[১৪]
নামাজ কবুল হওয়ার শর্ত
[সম্পাদনা]- ঈমান-আকীদা সহীহ শুদ্ধ হওয়া
- শিরকমুক্ত হওয়া
- বিদআতমুক্ত হওয়া
- মুনাফেকীমুক্ত হওয়া
- হারাম উপার্জন বর্জন করা
- সৃষ্টির ফরজ হক্ক (হাক্কুল ইবাদ) আদায় করা ও বান্দার হক্ক নষ্ট না করা
নিয়ম
[সম্পাদনা]নামাজের প্রধান ধাপগুলোকে 'রাকাত' বলা হয়। নামাজ দুই বা তিন বা চার রাকাত হতে পারে। ইসলামের বিভিন্ন সম্প্রদায়ে নামাজ পড়ার রীতিতে কিছু পার্থক্য রয়েছেঃ শিয়া ও সুন্নি পার্থক্য পাশাপাশি সুন্নিদের মধ্যে মাজহাবী পার্থক্য ও লা মাজহাবী তথা আহলে হাদীস বা সালাফী পার্থক্য।বিভিন্ন আলেমদের মতানুসারে, পার্থক্যসমূহ মূলত নামাজের মুস্তাহাব(ঐচ্ছিক) বিষয়াবলিতে।
নামাজ আরবিতে পড়ার কারণ
[সম্পাদনা]আহমেদ হুসাইন শরীফ তার "হোয়াই প্রে ইন এরাবিক" (নামাজ কেন আরবিতে পড়া হয়?) বইতে আরবিতে নামাজ পড়ার পেছনে যে সকল কারণ বলেছেন তা হল,
- আরবি হল একটি গভীর ও বিস্তৃত ভাষা
- নামাজের জন্য একটি সাধারণ ও সার্বজনীন ভাষা
- (আরবির মাধ্যমে) ইসলামী ভ্রাতৃত্বে সংযোগ স্থাপন।
- কুরআন হল আল্লাহর সৃজনকর্ম
- কুরআনের পূর্নাঙ্গ ও পরিপূর্ণ অনুবাদ করা অসম্ভব
- কুরআনই একমাত্র (ঐশীভাবে) সংরক্ষিত ওহী
- কুরআনের নিজস্ব ছন্দ রয়েছে
- দোয়া এবং নামাজের পার্থক্য হলোঃ দোয়া হল আমন্ত্রণ বা মিনতি, যা ঐচ্ছিক, তাই তা শিথিল এবং তা যে কোন ভাষায় করা যায়, আর নামাজ হলো প্রার্থনা, যা বাধ্যতামূলক ও তার নীতিমালা কঠোর, এছাড়া জামাতে ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে মুসলিমদের সামাজিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত রাখারও বাধ্যবাধকতা রয়েছে, একারণে নামাজ শুধু আরবিতে পড়তে হয়।
- আরবি নামাজ বুঝতে শেখা কঠিন কিছু নয় এবং তা সহজ।
পরিশেষে তিনি বলেন, "এইভাবে আমরা দেখতে পাই যে, নামাজের মাধুর্য, মর্যাদা, সৌন্দর্য এবং আধ্যাত্মিকতা মূল আরবীতে নামাজ পড়ার উপর নির্ভর করে; এবং যদি অনুবাদে নামাজ পড়া হয়, তবে কুরআনের সাহিত্যিক এবং শৈল্পিক মূল্যবোধ হারিয়ে যেতে বাধ্য; এবং অনূদিত নামাজের ফলে সর্বপ্রথম ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইসলামী ভ্রাতৃত্ব।"[১৫]
সুন্নি হানাফি নিয়ম
[সম্পাদনা]নামাজের প্রধান ধাপগুলোকে 'রাকাত' বলা হয়। নামাজ দুই বা তিন বা চার রাকাত হতে পারে। ইসলামের বিভিন্ন মাযহাবে নামাজ পড়ার রীতিতে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। তবে মূল আঙ্গিক অভিন্ন।
প্রথমে দাঁড়িয়ে তাকবীরে তাহরীমা বলে কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে নামাজ শুরু করতে হয়। তারপর সানা পড়তে হয়। সানা কেবল প্রথম রাকাতে পাঠ করতে হয়। প্রতি রাকাতে প্রথমে সুরা ফাতিহা ও অপর একটি সুরা বা অংশ বিশেষ পাঠ করতে হয়।
এরপর রুকু করতে হয় অর্থাৎ হাঁটুতে হাত রেখে ভর দিয়ে পিঠ আনুভূমিক করে অবনত হতে হয়। রুকু থেকে দাঁড়িয়ে ছোটো একটা বিরতি দিয়ে সিজদা করতে হয়। সিজদা দুুইবার করতে হয়, আর দুটি সিজদার মাঝে ছোট্ট একটা বৈঠক করতে হয়। ঠিক একই ভাবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাত সম্পূর্ণ করতে হয়।
দুই রাকআত নামাজের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাকাতের দুই সিজদা সম্পূর্ণ করার বসে যথাক্রমে "আত্তাহিয়াতু (তাশাহুদ)" ও "দরূদ শরীফ" ও "দোয়া মাসুরা" পড়তে হয়। অতঃপর প্রথমে ডানে ও পরে বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হয়।
তিন বা চার রাকাতের নামাজের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাকাতে সিজদার পর বসে তাশাহুদ ("আত্তাহিয়াতু") দোয়া পড়তে হয় এবং পাঠ শেষে দাঁড়িয়ে উঠে তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাত পড়তে হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে ফরজ নামাজে শুধু সূরা ফাতিহা পড়তে হয়। শেষ রাকাতের দুই সিজদা সম্পূর্ণ করার বসে যথাক্রমে "আত্তাহিয়াতু (তাশাহুদ)" ও "দরূদ শরীফ"ও "দোয়া মাসুরা" পড়তে হয়। অতঃপর প্রথমে ডানে ও পরে বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হয়।[১৬]
আহলে হাদীস/সালাফি পার্থক্য
[সম্পাদনা]- নামাজের নিয়মে মাজহাব বা ইমাম বা আলেমের তাকলিদ না করে সহীহ হাদীস অনুসরণ করা
- নামাজের নিয়তে নির্দিষ্ট কোন দোয়া না পড়া
- নামাজে নাভির উপরে/বুকের উপর হাত বাধা
- সশব্দে আমীন বলা
- রুকুর আগে ও পরে এবং সিজদার আগে তাকবীরে হাত তোলা
- সিজদায় যাওয়ার সময় পায়ের আগে হাত রাখা
- সেজদা থেকে উঠে দাড়ানোর সময় হাতে ভর করে ওঠা
- তাশাহুদে তর্জনী আঙ্গুল ক্রমাগত নাড়ানো
- সিজদা সাহু নামাজ শেষে সালাম ফেরানোর পর করা
- তিন রাকাত বিতরে দ্বিতীয় রাকাতে বৈঠকে না বসা
- বিতরের নামাজে প্রচলিত হানাফি দোয়ায় কুনুতকে কুনুতে নাজেলা বা বিপদকালীন কুনুত দাবি করে তা বিপদ ছাড়া নিয়মিত না পড়া এবং সিহাহ সিত্তাহসহ সুন্নি হাদীসে বর্নিত অন্যান্য কুনুত পড়া
- বিতর নামাজকে ওয়াজিব বলার ক্ষেত্রে কোন কোন আহলে হাদীস আলেমের ভিন্নমত পোষণ করা
- ফরজ নামাজ শেষে সম্মিলিত মুনাজাত না করা
- জুম্মার নামাজের খুতবার পূর্বে বা মসজিদে প্রবেশের সাথে সাথে সুন্নত পড়া ও তা চার রাকাতের পরিবর্তে দুই রাকাত পড়া
- মাগরিবের ফরজ নামাজের আগে মসজিদে প্রবেশের পর দুইরাকাত সুন্নত নামাজ পড়া বা পড়তে উৎসাহিত করা
- অনারব দেশসমূহে জুম্মার নামাজে জনগণের বোধগম্য ভাষায় শুধুমাত্র একটি খুতবা দেওয়া, আলাদাভাবে আরবিতে খুতবা না দেওয়া
নামাজের ফরজ
[সম্পাদনা]নামাজের ফরজ মোট ১৪টি। আহকাম ৭ টি। আরকান ৭ টি। নামাজের বাহিরের কাজগুলিকে আহকাম বলে। আর নামাজের ভিতরের কাজগুলোকে আরকান বলে।
আহকাম
[সম্পাদনা]- শরীর পবিত্র হওয়া।
- কাপড় বা বস্ত্র পবিত্র হওয়া।
- নামাজের জায়গা পবিত্র হওয়া।
- সতর ঢেকে রাখা।
- কিবলামুখী হওয়া।
- ওয়াক্তমত নামাজ আদায় করা
- নামাজের নিয়্যত করা
আরকান
[সম্পাদনা]- তাকবীরে তাহরীমা (আল্লাহু আকবার) বলে নামাজ শুরু করা।
- দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া।
- সুরা ফাতিহার সাথে কুরআন পড়া।
- রুকু করা।
- দু্ই সিজদা করা।
- শেষ বৈঠক করা।
- সালাম ফেরানোর মাধ্যমে সালাত শেষ করা।
ওয়াক্ত ও রাকাত
[সম্পাদনা]প্রতিদিন একজন মুসলিমকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হয়। প্রথম ওয়াক্ত হল "ফজর নামাজ" সুবহে সাদিক হতে সূর্যোদয় পর্যন্ত এর ব্যপ্তিকাল। এরপর "যুহর ওয়াক্ত" বেলা দ্বিপ্রহর হতে "আসর ওয়াক্ত"-এর আগ পর্যন্ত যার ব্যপ্তি। তৃতীয় ওয়াক্ত "আসর ওয়াক্ত" যা সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত পড়া যায়। চতুর্থ ওয়াক্ত হচ্ছে "মাগরিব ওয়াক্ত" যা সূর্যাস্তের ঠিক পর পরই আরম্ভ হয় এবং এর ব্যপ্তিকাল প্রায় ৩০-৪৫ মিনিট। "মাগরিব ওয়াক্ত" এর প্রায় ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট পর আরম্ভ হয় "ইশা ওয়াক্ত" এবং এর ব্যপ্তি প্রায় "ফজর ওয়াক্ত"-এর আগ পর্যন্ত।
উপর্যুক্ত ৫ টি ফরজ নামাজ ছাড়াও ইশা'র নামাজের পরে বিতর নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি সুন্নত নামাজ ও মুসলিমরা আদায় করে থাকে।
কোন ওয়াক্ত-এর নামাজ কয় রাকাত তা দেয়া হল :
নাম | সময় | ফরযের পূর্বে সুন্নত | ফরয | ফরযের পর সুন্নত |
---|---|---|---|---|
ফযর (فجر) | ঊষা থেকে সূর্যোদয় | ২ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা | ২ রাকাত | - |
যুহর (ظهر) | ঠিক দুপুর থেকে আসরের পূর্ব পর্যন্ত | ৪ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা | ৪ রাকাত | ২ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা |
আসর (عصر) | যোহরের শেষ ওয়াক্ত থেকে সূর্য হলুদ বর্ণ পূর্ব পর্যন্ত অন্য মতে সূর্যস্তের পূর্ব পর্যন্ত | ৪ রাকাত সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা | ৪ রাকাত | - |
মাগরিব (مغرب) | সূর্যাস্তের পর থেকে গোধূলি পর্যন্ত | - | ৩ রাকাত | ২ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা |
ইশা (عشاء) | গোধূলি থেকে অর্ধ রাত পর্যন্ত | ৪ রাকাত সুন্নতে গায়রে মুয়াক্কাদা | ৪ রাকাত | ২ রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা |
বিতর (وتر) | ইশার পর থেকে ফজরের পূর্র পর্যন্ত | ১ বা ৩ বা ৫ বা ৭ বা ৯ বা ১১ বা ১৩ |
১ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) প্রতিদিন এ নামাজগুলো পড়তেন।
২শুক্রবারে জুমার নামাজ যোহরের নামাজের পরিবর্তে পড়তে হয়
এশার নামাজ আদায় করার পর বেজোড় সংখ্যক রাকাত বিতর এর ওয়াজিব নামাজ আদায় করতে হয়।
আয়াতসমূহ
[সম্পাদনা]"সমস্ত সালাতের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী সালাতের (আসর) ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও।" (কুরআন– ২:২৩৮)
"আর দিনের দুই প্রান্তেই (ফজর ও মাগরিব) সালাত ঠিক রাখবে, এবং রাতের প্রান্তভাগে (ইশা অথবা তাহাজ্জুদ) পূর্ণ কাজ অবশ্যই পাপ দূর করে দেয়, যারা স্মরণ রাখে তাদের জন্য এটি এক মহা স্মারক।" (কুরআন– ১১:১১৪)
"কাজেই তারা যা বলছে তাতে তুমি ধৈর্য ধারণ কর এবং তোমার প্রতিপালকের প্রশংসা (নিয়মিত) উচ্চারণ কর সূর্যোদয়ের পূর্বে (ফজর) ও তা অস্তমিত হওয়ার পূর্বে (আসর) এবং তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর রাত্রিকালে (ইশা ও তাহাজ্জুদ) ও দিনের প্রান্তগুলোয় (জোহর ও মাগরিব) যাতে তুমি সন্তুষ্ট হতে পার।" (কুরআন– ২০:১৩০)
"তুমি ধৈর্য ধরে তোমার প্রতিপালকের হুকুমের অপেক্ষায় থাক, কারণ তুমি আমার চোখের সামনেই আছ। আর তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসা ঘোষণা কর যখন তুমি উঠ (মাজলিস শেষে, অথবা বিছানা ছেড়ে কিংবা নামাযের জন্য)। আর রাত্রিকালে (ইশা) তাঁর প্রশংসা ও মহিমা ঘোষণা কর আর (রাতের শেষভাগে যখন) তারকারাজি অস্তমিত হয়ে যায় (তাহাজ্জুদ, পরে ফজর)।" (কুরআন– ৫২:৪৮-৪৯)
অন্যান্য নামাজ
[সম্পাদনা]নামাজের মধ্যে মূল হলো ফরয নামাজ ৷ এই ফরজ নামাজ ছাড়াও মুসলমানগণ আরো কিছু নামাজ আদায় করে থাকেন। আবশ্যকীয়তার স্তরভেদে সেগুলোকে বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়ে থাকে। তবে শ্রেণিবিভাগ অনুসারে ফরয ছাড়া বাকি নামাজগুলোকে ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল এই তিনভাগে ভাগ করা যায়।
ওয়াজিব নামাজ
[সম্পাদনা]অধিকাংশ আলেমের মতে, নিয়মিত ওয়াজিব নামাজ হচ্ছে বিতর নামাজ, তবে বিতর নামাজকে সমস্ত মাযহাবে ওয়াজিব নামাজ হিসেবে গন্য করা হয় না। যেমন সালাফি আলেমগণের মতে এটি সুন্নত নামাজের অন্তর্ভুক্ত। প্রত্যেকদিন এশার নামাজের পর হতে সুবহে সাদিক পর্যন্ত এই ওয়াজিব নামাজের সময় থাকে। এছাড়া কোন নফল নামাজের নিয়ত করে নামাজ শুরু করলে তা আদায় করা ওয়াজিব হয়ে যায়। এছাড়া দুই ঈদের নামাজ আদায় করাও ওয়াজিব ।
সুন্নাত নামাজ
[সম্পাদনা]নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) যেই নামাজগুলো আদায় করতেন, তাকে সুন্নাত নামাজ বলে। সুন্নাত নামাজ দুই প্রকার। ১. সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ ২. সুন্নাতে যায়েদাহ
- সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ বলতে ঐসব নামাজকে বুঝায়, যেগুলো নবী (সা:) নিয়মিত আদায় করতেন। কখনো পরিত্যাগ করতেন না ৷
- সুন্নাতে যায়েদাহ বলতে বুঝায়, ইসলামের নবী মুহাম্মাদ (সা:) যেসব সুন্নাত নিয়মিত আদায় করতেন না। বরং প্রায় সময় আদায় করতেন ৷
নফল নামাজ
[সম্পাদনা]- নফল নামাজ হলো এক প্রকার ঐচ্ছিক নামাজ। নামাজের নিষিদ্ধ সময় ব্যতিত অন্য যেকোন সময়ে তা আদায় করা যায় ৷
- বিভিন্ন প্রকারের নফল নামাজ আদায়ের প্রমাণ হাদিস সমূহে বর্ণিত আছে।
- নফল নামাজ সমূহ সাধারণত ২ রাকাত করে আদায় করতে হয়। তবে চার রাকাত করেও আদায় করা যায় ৷
জানাযার নামাজ
[সম্পাদনা]জানাযা একটি বিশেষ প্রার্থনা যা কোনো মৃত মুসলমানকে কবর দেয়ার পূর্বে অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামের পরিভাষায় এটি জানাযার নামাজ নামে অভিহিত হয়। মুসলমান অর্থাৎ ইসলাম ধর্মামলম্বীদের জন্য এটি ফরযে কেফায়া ৷ সমাজের মুসলমানদের জন্য আবশ্যকীয় দায়িত্ব হলো কোনো মুসলমানের মৃত্যু বরণ করলে তাকে দাফন করার পূর্বে অবশ্যই জানাযার নামাজ আদায় করতে হবে। তবে কোনো এলাকা বা গোত্রের পক্ষ থেকে কয়েকজন আদায় করলে সকলের পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যায়।
জানাযার নামাজ একজন ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে দলবদ্ধভাবে হয়। অংশগ্রহণকারীরা কাতারবদ্ধ বা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে এ নামায আদায় করেন। এটি ৪ তকবিরের সাথে আদায় করতে হয়। দাঁড়িয়ে এ নামাজ আদায় করতে হয় ৷ জানাযা শেষে মৃতব্যক্তিকে অবিলম্বে গোরস্থানে নিয়ে যেতে হয় এবং ইসলামী রীতিতে কবর তৈরী করে দাফন করতে হয়।
জানাজা নামাজের নিয়ম
[সম্পাদনা]ইসলামের বিধান অনুসারে—প্রথমে দাড়িয়ে এই নিয়ত করতে হয় যে, "আমি এই ইমামের পিছনে চার তাকবিরের সাথে জানাজার ফরজে কিফায়া নামাজ আদায় করিতেছি "৷ এরপর আল্লাহু আকবার বলে তাকবির দিবে ৷ প্রথম তাকবিরের পর "সানা" পড়বে ৷ দ্বিতীয় তাকবিরের পর "দুরুদ শরীফ" ও তৃতীয় তাকবিরের পর "জানাজার দোয়া" পড়বে ৷ এরপর চতুর্থ তাকবিরের পর সালাম ফিরাবে ।
সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণের নামাজ
[সম্পাদনা]ইসলামে নামাজের গুরুত্ব
[সম্পাদনা]নামাজ (সালাত) ইসলামের পাঁচটি রোকন মধ্যে দ্বিতীয় রোকন৷ এ বিষয়ে ইবনে ওমর রাঃ বলেন, আমি রাসুল (সঃ) কে বলতে শুনেছি— ইসলামের মূল ভিত্তি পাঁচটি , "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ" এর সাক্ষ্য প্রদান করা, সালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, রমজান মাসের রোজা পালন করা এবং সামর্থ থাকলে হজ্বব্রত পালন করা ৷ (সহিহ মুসলিম; কিতাবুল ইমান) অপর হাদিসে রাসুল (সঃ) বলেছেন, দ্বীনের মূল বিষয় হলো ইসলাম, এবং মূল স্তম্ভ হলো নামাজ, আর তার সর্বোচ্চ চূড়া হলো জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ৷ (সহিহ মুসলিম, তিরমিযী, মুসনাদে আহমাদ)। অন্য আরেক হাদিসে এসেছে– আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি আল্লাহ্র রসূল (সঃ)-কে বলতে শুনেছেন, বলতো যদি তোমাদের কারো বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে, আর সে তাতে প্রত্যহ পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তাঁর দেহে কোন ময়লা থাকবে? তারা বললেন, তাঁর দেহে কোনরূপ ময়লা বাকী থাকবে না। আল্লাহ্র রসূল (সঃ) বললেন: এ হলো পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের উদহারণ। এর মাধ্যমে আল্লাহ্ তাআলা বান্দার গুনাহসমুহ মিটিয়ে দেন। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫২৮)
কুরআন বলে, নামাজ অশ্লীল ও নিষিদ্ধ কাজ হতে বিরত রাখে। কুরআনে রয়েছে,
‘(হে রাসুল!) আপনার প্রতি যে কিতাব ওহি (নাজিল) করা হয়েছে; তা থেকে তেলাওয়াত করুন আর নামাজ প্রতিষ্ঠা করুন। নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল (ফাহিশা) ও মন্দকাজ (মুনকার) থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর।’
— (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৪৫)
নামাজ পড়ার নির্দেশ
[সম্পাদনা]আমর ইবনে শুয়াইবের দ্বারা তার পিতা হতে বর্ণিত, তার দাদা বলেছেনঃ আল্লাহর রাসূল বলেছেনঃ তোমাদের শিশুদেরকে সাত বছর বয়সে (ফরজ) নামাজের নির্দেশ দাও, আর দশ বছর বয়স থেকে তাদের প্রহার কর যদি তারা তা না করে, আর তাদেরকে নিজ নিজ বিছানায় আলাদা করে দাও।"
— আবু দাউদ (৪৯৫)
নামাজের পুরস্কার
[সম্পাদনা]আনাস বিন মালিক বর্ণনা করেছেন যে: আল্লাহর রসূল, সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম (তার উপর আল্লাহর আশীর্বাদ ও শান্তি বর্ষিত হোক), বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি প্রথম তাকবীর ধরে চল্লিশ দিন পর্যন্ত আল্লাহর জন্য জামাতে (৫ ওয়াক্ত ফরজ) নামায আদায় করে, তার জন্য দু’টি নাজাত লেখা হয়ঃ জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং মুনাফেকী থেকে মুক্তি।
— জামে আত-তিরমিযী ২৪১, সহীহা ১৯৭৯, সহীহ আত-তারগীব ৪০৯, সহীহ আল-জামি' ৬৩৬৫
নামাজ না-পড়ার বা নামাজে অবহেলার জন্য বিধান
[সম্পাদনা]কুরআনে বর্ণিত নামাজ তরককারীর শাস্তির কথাগুলো মানুষ জানতে পারলে নামাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতে নিয়োজিত রাখবে। তাই কুরআনে ঘোষিত বেনামাজির শাস্তির কথাগুলো তুলে ধরা হলো-
আল্লাহ তাআলা বলেন,
“ | فَخَلَفَ مِنْ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلَاةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا ٥٩ إِلَّا مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَأُولَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلَا يُظْلَمُونَ شَيْئًا ٦٠
'নবী ও হেদায়েতপ্রাপ্তদের পর এলো এমন এক অপদার্থ বংশধর, যারা নামাজ বিনষ্ট করল এবং প্রবৃত্তির পূজারি হলো। সুতরাং তারা ‘গাই’[টীকা ১] নামক জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। তবে যারা এরপর তওবা করে নিয়েছে, ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তারাই তো জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি কোনো ধরনের জুলুম করা হবে না।’ |
” |
— সুরা মারইয়াম : আয়াত ৫৯-৬০ |
- বেনামাজির অবস্থান হবে সাকার নামক জাহান্নাম। আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতিটি কাজের হিসাব নেবেন। আর প্রতি কাজের হিসাব দিতে না পারলে শাস্তি অবধারিত। শাস্তি প্রাপ্ত মানুষকে তাদের অপরাধে কথা জিজ্ঞাসা করা হলে তারা তাদের অপরাধগুলোও বলতে থাকবে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে সে কথা তুলে ধরেন এভাবে-
“ | مَا سَلَكَكُمْ فِي سَقَرَ ٦٢ قَالُوا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّينَ ٤٣
‘কোন জিনিস (কাজ) তোমাদেরকে (সাকার) জাহান্নামে নিয়ে এল? তারা বলবে আমরা নামাজিদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না। |
” |
— সুরা আল-মুদ্দাচ্ছির : আয়াত ৪২-৪৩ |
- যথাযথভাবে নামাজ না পড়ার শাস্তিযারা মোটেও নামাজ পড়ে না বা পড়লেও করে অবহেলা ও অলসতা। অথবা নামাজে দেরি করে। লোক দেখানো নামাজ পড়ে। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন-
“ | فَوَيْلٌ لِلْمُصَلِّينَ ٤ الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ ٥ الَّذِين هُمْ ٦
‘সুতরাং দুর্ভোগ (ওয়াইল নামক জাহান্নামের কঠিন শাস্তি) সেসব নামাজ আদায়কারীদের জন্য যারা তাদের নামায সম্পর্কে উদাসীন। যারা তা লোকদের দেখানোর জন্য আদায় করে ’ |
” |
— সুরা মাউন : আয়াত ৪-৬ |
- হাশরের ময়দানে যেসব বেনামাজি অপমানিত হবে।দুনিয়াতে যারা যথাযথভাবে নামাজ আদায় করবে, পরকালে তারা আল্লাহর নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গে সেজদায় লুটিয়ে পড়বে। আর যারা দুনিয়াতে যথাযথভাবে নামাজ পড়বে না, লোক দেখানো কিংবা সুনাম লাভের আশায় নামাজ পড়তো তারা সে দিন সেজদা করতে পারবে না। বরং তারা হবে অপমানিত ও লাঞ্ছিত। আল্লাহ তাআলা বলেন-
“ | يَوْمَ يُكْشَفُ عَنْ سَاقٍ وَيُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ ٤٢ خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ وَقَدْ كَانُوا يُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ وَهُمْ سَالِمُونَ ٤٣
‘(স্মরণ কর) সেই চরম সংকটময় কিয়ামত দিবসের কথা যেই দিন তাদেরকে আহবান করা হবে সেজদা করার জন্য কিন্তু তারা তা করতে সক্ষম হবেনা। তাদের দৃষ্টি অবনত হবে, হীনতা তাদের আচ্ছন্ন করবে অথচ যখন তারা নিরাপদ ছিল, তখন তো তাদের সেজদা করার আহ্বান করা হতো (কিন্তু তারা সেজদা করেনি)।’ |
” |
— সুরা আল-কালাম : আয়াত ৪২-৪৩ |
নামায পরিত্যাগকারীর হুকুম
[সম্পাদনা]যে ব্যক্তি নামাযকে অবহেলা করে নামায পরিত্যাগ করে, এর ফরয অস্বীকার করে, জেনেও যে আল্লাহ তা আদায় করতে আদেশ করেছেন, তাহলে উম্মতের ঐক্যমতের দ্বারা সে মুরতাদ এবং কাফের। যে কেউ এর অস্তিত্ব সম্পর্কে অজ্ঞতা থেকে এটি ত্যাগ করে, যে ইসলামে নতুন, তাকে কাফের বলে বিবেচনা করা হয় না, তবে তাকে শিক্ষা দেওয়া হয় এবং আদেশ করা হয়। ইবনে আবদ আল-বার বলেন: মুসলমানরা সর্বসম্মতভাবে একমত যে, যে ব্যক্তি সালাতের ফরজ অস্বীকার করে সে কাফের এবং সে তার কুফর থেকে তওবা না করলে তাকে হত্যা করা হবে।[১৭][১৮]
নিচের টেবিলে নামাজকে অবজ্ঞা বা সাধারণভাবে নামাজ পরিত্যাগকারীদের হুকুম বর্ণনা করা হলো:
মাযহাব |
নামায পরিত্যাগকারীর হুকুম (সংক্ষেপে) |
মন্তব্য |
---|---|---|
হানাফি | ফাসিক | তাকে বন্দী করা হয় যতক্ষণ না সে প্রার্থনা করে, এবং তাকে মারধর করা হয় যতক্ষণ না তার থেকে রক্ত প্রবাহিত হয়।[১৯] |
মালেকি | ফাসিক | বারংবার নামার ত্যাগ করার জন্য কুফরির শাস্তি হিসেবে তাকে হত্যা করা হবে[২০] |
শাফিয়ি | ফাসিক | বারংবার নামার ত্যাগ করার জন্য কুফরির শাস্তি হিসেবে তাকে হত্যা করা হবে[২১] |
হাম্বলি | কাফির[২২] | তবে সাধারণতঃ তাকফির করা হয়না। তাকফির করার জন্য অন্যান্য আরও শর্ত প্রয়োগ করা হয়।[২৩][২৪] |
শিয়া | ফাসিক | - |
ইবনে উসাইমিনের মতে, সালাত আদায়কারী মুসলিম নারীর সাথে বেনামাযীর বিয়ে দেওয়া নাজায়েয। তার অভিভাবকত্ব বিলুপ্ত, তার জবাহকৃত গোশত খাওয়া নাজায়েয, সে তার কোনো আত্মীয়ের সম্পত্তির অংশ পাবে না। তেমনি তার আত্মীয়গণও তার থেকে কোনো অংশের অধিকারী হবে না, মারা গেলে তার জানাযা আদায় করা যাবে না, তার ক্ষমা ও করুণার জন্য দো‘আ করা যাবে না, মুসলিমদের কবরস্থানে দাফন করা হবে না এবং সে দীনী ভাই হিসেবে গণ্য হবে না, বরং তার থেকে বিমুখ হওয়া ও তার সাথে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন ছিন্ন করা ওয়াজিব। বেনামাযীকে কবরে শাস্তি দেওয়া হবে, যেমন সহীহ বুখারীতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক স্বপ্নের বর্ণনায় রয়েছে: “তিনি চিৎ অবস্থায় শায়িত এক ব্যক্তির নিকট আসলেন, এমতাবস্থায় একটি পাথর হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে অন্য একজন, অতঃপর সে উক্ত পাথর দিয়ে তার (শায়িত ব্যক্তির) মাথায় আঘাত করছে, যার ফলে তার মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে, পাথরটি ছিটকে দূরে চলে যাচ্ছে, পুনরায় সে দৌড়ে গিয়ে পাথরটি নিয়ে ফিরা মাত্র উক্ত ব্যক্তির মাথা পূর্বের ন্যায় ঠিক হয়ে যাচ্ছে। পুনরায় ঐ ব্যক্তি আপন স্থানে ফিরে তাকে ঐ ভাবেই (শাস্তি) দিচ্ছে যেভাবে প্রথমবার দিয়েছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন তখন দুই ফিরিশতা তাঁকে অবহিত করেন যে, এতো ঐ ব্যক্তি যে কুরআন পড়ত, কিন্তু তার প্রতি আমল করত না এবং ফরয সালাত ছেড়ে ঘুমাত।[২৫]
নামায ভঙ্গের কারণ
[সম্পাদনা]১. নামাযে অশুদ্ধ পড়া।
২. নামাযের ভিতর কথা বলা।
৩. কোন লোককে সালাম দেওয়া।
৪. সালামের উত্তর দেওয়া।
৫. উহঃ আহঃ শব্দ করা।
৬. বিনা উযরে কাশি দেওয়া।
৭. আমলে কাছীর করা।
৮. বিপদে কি বেদনায় শব্দ করিয়া কাদা।
৯. তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় সতর খুলিয়া থাকা।
১০. মুক্তাদি ব্যতীত অপর ব্যক্তির লুকমা নেওয়া।
১১. সুসংবাদ ও দুঃসংবাদের উত্তর দেওয়া।
১২. নাপাক জায়গায় সিজদা করা।
১৩. ক্বিবলার দিক হইতে সীনা ঘুরিয়া যাওয়া।
১৪. নামাযে কুরআন শরীফ দেখিয়া পড়া।
১৫. নামাযে শব্দ করিয়া হাসা।
১৬. নামাযে দুনিয়াবী কোন কিছুর প্রার্থনা করা।
১৭. হাচির উত্তর দেওয়া
(জওয়াবে “ইয়ারহামুকাল্লাহ” বলা)।
১৮. নামাযে খাওয়া ও পান করা।
১৯. ইমামের আগে মুক্তাদি দাড়ানো বা খাড়া হওয়া।
নামাজ মাকরূহ হওয়ার কারণ
[সম্পাদনা]১। পেশাব পায়খানার চাপ অনুভব করার পর তা নিয়ে নামাজ আদায় করলে নামায মাকরুহ হবে।
২। নামাজের মধ্যে শরীরের কাপড় বা অন্য কোন জিনিস নাড়াচাড়া করলে নামাজ মাকরুহ হবে।
৩। দাঁড়িয়ে অহেতুক হাত লাগানো বা ধূলা ইত্যাদি পরিষ্কার করা।
৪। ধুলাবালি হতে কাপড় পরিষ্কার রাখার জন্য সতর্কতার সাথে নামাজের রুকুন আদায় করা।
৫। নামাজে নিম্ন মানের পোশাক পরিধান করা। যে পোশাক পরে সাধারণত কোনো মজলিস বা অনুষ্ঠানে যেতে পছন্দ করে না।
৬। নামাজের মধ্যে কনুই পর্যন্ত খোলা রাখা।
৭। নামাজের মধ্যে পুরুষের মাথার চুল বেঁধে রাখা।
৮। নামাজের মধ্যে আঙ্গুল ফোটানো।
৯। নামাজের মধ্যে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে নামাজ মাকরুহ হবে।
১০। নামাজের মধ্যে ঘাঁড় ফিরিয়ে তাকানো। যদি ঘাড় কাবার দিক হতে ঘুরে যায় তবে নামাজ ভেঙে যাবে।
১১। নামাজের মধ্যে বিনা কারণে চোখ বাঁকিয়ে তাকানো।
১২। মহিলাদের উভয় পা খাড়া করে বসা।
১৩। শুধু কপাল মাটিতে ঠেকিয়ে সিজদা করা।
১৪। সিজদার মধ্যে পুরুষের উভয় হাত কনুই পর্যন্ত মাটিতে বিছিয়ে রাখা।
১৫। এক তাসবীহ পরিমাণ পা মাটিতে রাখার পর বিনা কারণে এক পা উঠিয়ে রাখা; বা সেজদার মধ্যে দুই পা উপরে উঠিয়ে রাখা।
১৬। হাত বা পায়ের আংগুল সমূহ কিবলার দিক হতে অন্যদিকে ফিরিয়ে রাখা।
১৭। নামাজের মধ্যে ইচ্ছাকৃত হাই তোলা।
১৮। চোখ বন্ধ করে নামাজ পড়া।
১৯। বিনা কারণে নামাজের মধ্যে থুতু ফেলা।
২০। হাত কিংবা মাথার ইশারায় সালামের জবাব দেওয়া।
২১। রুকুর মধ্যে হাঁটুতে হাত না রাখলে নামাজ মাহরুহ হবে।
২২। উভয় সেজদার মাঝের বৈঠকে বা প্রথম বৈঠক বা শেষ বৈঠকে উরুর উপর হাত না রাখা।
২৩। নামাজের মধ্যে ইচ্ছাকৃত সুন্নতের খেলাফ কাজ করা এবং অহেতুক নামাজের মধ্যে মশা, পিঁপড়া বা উকুন মারা।
২৪। পয়সা বা এই জাতীয় কোন কিছু মুখের ভেতর রেখে নামাজ পড়া।
২৫। নামাজের মধ্যে ইচ্ছা করে গন্ধ বা ঘ্রাণ নেয়া।
২৬। পরিধান করা পোশাক বা পাখা দিয়ে বাতাস করা।
২৭। মুখমন্ডল ঢেকে রেখে নামাজ আদায় করলে সালাত মাকরুহ হবে।
২৮। নিজের পরিধান করা কাপড় বা চাদর এমন ভাবে জড়িয়ে নামাজ আদায় করা যেন তা থেকে হাত বের করতে অনেক কষ্ট হয়।
২৮। পাগড়ির উপর সেজদা করলে নামাজ মাকরুহ হবে।
২৯। জামা ব্যবহার করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও শুধু লুঙ্গি বা পায়জামা পরিধান করে নামাজ পড়া।
৩০। দুই কাঁধে চাদর বা কাপর পেঁচিয়ে নামাজ আদায় করা।
৩১। প্রাণীর ছবি যুক্ত পোশাক পরে নামাজ আদায় করা।
৩২। লোভনীয় খাবার মজুদ রেখে নামাজ আদায় করা।
৩৩। জলন্ত আগুন সামনে রেখে নামাজ আদায় করা।
৩৪। যে জায়গায় নামাজ আদায় করলে নামাজের ভিতরে অন্য মনস্ক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেখানে নামায পড়া।
৩৫। কারো যায়গায় তার অখুসি বা বাধা সত্ত্বেও নামাজ আদায় করা।
৩৬। নাপাক স্থানের পাশে দাড়িয়ে নামাজ পড়া।
৩৭। বায়তুল শরীফের ছাদে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা।
৩৮। বিনা কারণে উঁচু বা নিচু জায়গায় সেজদা করা।
৩৯। বিনা কারণে নামাজে কোন কিছুর সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা।
৪০। সামনের কাতারে জায়গা থাকার পরও পিছনের কাতারে দাঁড়িয়ে একা একা নামাজ পড়া।
৪১। রুকু সিজদা সহ নামাজের কোনো আমলে মুক্তাদী ইমামের আগে চলে গেলে তা মাকরুহ তাহরীমী হবে।
৪২। নামাজের মধ্যে আঙ্গুল দিয়ে সুরা আয়াত বা তাসবিহ গণনা করা যাবেনা। এতে মাকরুহ হবে।
৪৩। প্রথম রাকাতের চেয়ে দ্বিতীয় রাকাত লম্বা করা।
৪৪। ফরজ নামাজের একই রাকাতে কোন সূরা বা আয়াত বার বার পাঠ করা।
৪৫। কিয়ামের হালতে সূরা শেষ না করে, রুকুতে গিয়ে ও তার কিছু অংশ তেলাওয়াত করা।
৪৬। কোনো রাকাতের জন্য কোনো সূরাকে এমন ভাবে নির্দিষ্ট করা, যে কেউ উক্ত সূরা ছাড়া নামাজ আদায় করে না।
৪৭। ফরজ নামাজে কুরআনের ধারাবাহিক নিয়ম বজায় না রেখেই কেরাত পড়া।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- নামাজের নিয়মাবলী
- রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নামাজ/সালাত সম্পাদন পদ্ধতি, (বই) - মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দিন আল-আলবানীর বই
- ফরজ নামাজ
- জামাআতের নামাজ
- রোযা
- মেরাজ
টীকা
[সম্পাদনা]- ↑ গাইয়া’ হলো, জাহান্নামের একটি নদীর তলদেশ, যার গভীরতা অনেক, যেখানে আছে রক্ত ও পুঁজের নিকৃষ্টতম আস্বাদ। (তাফসিরে ইবনে কাসির)
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ নাজিব, আসিম (২৯ ডিসেম্বর ২০২১)। "ফরজ নামাজ না পড়লে যে গুনাহ"। dhakapost.com। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "ছালাতুর রাসূল (ছা:)- ছালাত বিষয়ে জ্ঞাতব্য"। www.at-tahreek.com। ২০১৯-১১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১২।
- ↑ Lane, Edward William (১৯৬৮)। An Arabic-English Lexicon। Beirut, Lebanon: Librairie du Liban। পৃষ্ঠা 1721। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০২০।
- ↑ Murata, Sachiko; Chittick, William C. (১৯৯৪)। The vision of Islam (ইংরেজি ভাষায়)। Paragon House। আইএসবিএন 978-1-55778-516-9।
- ↑ ইংরেজি উইকিঅভিধানে نماز
- ↑ YOUSOF, GHULAM-SARWAR (৩০ ডিসেম্বর ২০১৫)। One Hundred and One Things Malay। Partridge Publishing Singapore। আইএসবিএন 9781482855340।
- ↑ তাখরিজুল তাহাবিয়া ১৩৯, মিশকাত ২১৩৭, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ২৯১০ হাদীসের মান: সহীহ
- ↑ "সুনান আত তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) | হাদিস: ২৯১০ [ ]"। www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৯।
- ↑ "রাসূলুল্লাহ সা:-এর সংক্ষিপ্ত জীবনপঞ্জি"। ২৯ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ Ramzy, Sheikh (২০১২-০৭-২৩)। The Complete Guide to Islamic Prayer (Salāh) (ইংরেজি ভাষায়)। Author House। আইএসবিএন 978-1-4772-1465-7।
- ↑ সূরা নিসা:১০৩
- ↑ Salīm, ʻAmr ʻAbd al-Munʻim (২০০৫)। Important Lessons for Muslim Women (ইংরেজি ভাষায়)। Darussalam। আইএসবিএন 978-9960-732-35-0।
- ↑ সূরা মুদ্দাসসির:৪
- ↑ সূরা মায়িদা:৬
- ↑ Sheriff, Ahmed H. (১ জানুয়ারি ১৯৯১)। Why Pray in Arabic? (ইংরেজি ভাষায়)। Bilal Muslim Mission of Tanzania। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০২২।
- ↑ Qadiri Razavi, Muhammad Ilyas Attar (২০০৯)। Laws of Salah (পিডিএফ)। Karachi, Pakistan: MAKTABA-TUL-MADINA। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০২২।
- ↑ "يَدّعي الإجماع من يقول بكفر تارك الصلاة ومن يقول بعدم كفره ، فكيف نفهم حكاية الإجماع من كل منهما ؟ - islamqa.info"। web.archive.org। ২০১৭-১০-২৬। Archived from the original on ২০১৭-১০-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২২।
- ↑ "الاصول الثلاثة - المجلس 5 - محمد بن شمس الدين - YouTube"। web.archive.org। ২০১৯-১২-১৫। Archived from the original on ২০১৯-১২-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২২।
- ↑ দুররুল মুখতার 52
- ↑ আত তাফরিঈ (লেখক: ইবনে জ্বালাব)
- ↑ مغني المحتاج 1/612
- ↑ মাগনি(২/১৫৬)
- ↑ ইবনে উসাইমিন। মাজমুউল ফাতাওয়া ইবনে উসাইমিন। ১২। পৃষ্ঠা ৫৫।
- ↑ মুগনি ২/১৫৭
- ↑ "সালাত পরিত্যাগকারীর ফাতওয়ার ভিত্তিতে কতিপয় বিধান আরোপ হয়"। www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২২।
(শাইখ মুহাম্মাদ ইবন উসাইমীনের “সালাত পরিত্যাগকারীর বিধান” নামক রিসালা থেকে সংকলিত)
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- নবী (সা.) এর ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি (বাংলা অনুবাদ) - মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দিন আলবানী (অনলাইনে ইউনিকোডে সম্পূর্ণ বই)
- স্বলাতে মুবাশশির - আব্দুল হামিদ ফাঈযী
- ছালাতুর রাসূল (সাঃ) - মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
- - জ্বাল হাদীসের কবলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ছালাত - মুজাফফর বিন মহসিন
- চেয়ারে বসে সালাত আদায় - ইসলামহাউজ.কম