বিষয়বস্তুতে চলুন

বব ক্রিস্প

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বব ক্রিস্প
১৯৩৫ সালে বব ক্রিস্প
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
রবার্ট জেমস ক্রিস্প
জন্ম(১৯১১-০৫-২৮)২৮ মে ১৯১১
কলকাতা, বাংলা প্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু৩ মার্চ ১৯৯৪(1994-03-03) (বয়স ৮২)
কোলচেস্টার, এসেক্স, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক১৫ জুন ১৯৩৫ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯২৯–১৯৩১রোডেশিয়া
১৯৩১–১৯৩৬ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স
১৯৩৮ওরচেস্টারশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৬২
রানের সংখ্যা ১২৩ ৮৮৮
ব্যাটিং গড় ১০.২৫ ১৩.০৫
১০০/৫০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ৩৫ ৪৫
বল করেছে ১৪২৯ ১০৯৬৮
উইকেট ২০ ২৭৬
বোলিং গড় ৩৭.৩৫ ১৯.৮৮
ইনিংসে ৫ উইকেট ২১
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৯৯ ৯/৬৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩/০ ২৭/০
উৎস: ক্রিকইনফো, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

রবার্ট জেমস ক্রিস্প, ডিএসও, এমসি (ইংরেজি: Bob Crisp; জন্ম: ২৮ মে, ১৯১১ - মৃত্যু: ৩ মার্চ, ১৯৯৪) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রদেশের কলকাতায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৬ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে রোডেশিয়া, ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স, ওরচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন বব ক্রিস্প

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

ভারতের বাংলা প্রদেশের কলকাতায় বব ক্রিস্পের জন্ম। টেস্টের তুলনায় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটেই সর্বাধিক সফলতা পেয়েছেন বব ক্রিস্প। টেস্টে তার বোলিং গড় ৩৭.০০-এর বেশি হলেও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৯.৮৮ গড়ে ২৭৬ উইকেট লাভ করেছেন।[]

১৯২৯ থেকে ১৯৩১ সময়কালে রোডেশিয়ার পক্ষে বিক্ষিপ্তভাবে খেলেন ও মাত্র সাত উইকেট পেয়েছিলেন। এরপর ১৯৩১-৩২ মৌসুমে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সে চলে যান।[] ঐ মৌসুমে ১৪.৯৩ গড়ে ৩৩ উইকেট দখল করেছিলেন। তন্মধ্যে, গ্রিকুয়াল্যান্ড ওয়েস্টের বিপক্ষে আট উইকেট পেয়েছিলেন বব ক্রিস্প।[][] ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে ২৬ উইকেট লাভের প্রাক্বালে পাঁচ বা ততোধিক উইকেটের সন্ধান পেয়েছেন। ১৯৩৩-৩৪ মৌসুমে ২৭ উইকেট লাভ করেন। এ পর্যায়ে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ৯/৬৪ পেয়েছিলেন।[][]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অনবদ্য রেকর্ড গড়ে নিজেকে স্মরণীয় করে রেখেছেন। একমাত্র বোলার হিসেবে চার বলে চার উইকেট লাভের নজির একাধিকবার করেছেন।[][]

টেস্ট ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯৩৫ সালে বব ক্রিস্প ইংল্যান্ড সফরে যান। এ সফরে ১৯.৫৮ গড়ে ১০৭ উইকেট দখল করেন। ওল্ড ট্রাফোর্ডে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে স্বাগতিক দলের বিরুদ্ধে ৫/৯৯ লাভ করেন। ফলশ্রুতিতে তার দল প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে জয়লাভের গৌরব অর্জন করে।[] এ পর্যায়ে সফরে এটি তার অষ্টমবারের মতো পাঁচ-উইকেট অর্জন ছিল।[] তন্মধ্যে, পাঁচ টেস্টে অংশ নিয়ে ৩৪.১৫ গড়ে তেরো উইকেট দখল করেছিলেন তিনি।[]

এরপর দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে এসে ৪৫.৩৩ গড়ে বেশ ব্যয়বহুল নয় উইকেট পান। তন্মধ্যে, সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চার টেস্টে মাত্র সাত উইকেট পেয়েছিলেন বব ক্রিস্প। এরপর আবারও তিনি ইংল্যান্ডে চলে যান ও ঐ গ্রীষ্মে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় একবার চার উইকেট পেয়েছিলেন।[][]

১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে স্যার জুলিয়েন কানের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে সিলন ও মালয় গমন করেন। সিলনের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় ছয় উইকেট পেয়েছিলেন বব ক্রিস্প। এরপর ইংল্যান্ডে ফিরে ১৯৩৮ সালে ৪৪ উইকেট পান। তন্মধ্যে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে এক পর্যায়ে ৫/০ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করিয়েছিলেন।[][]

বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ

[সম্পাদনা]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন বব ক্রিস্প ৩য় রয়্যাল ট্যাঙ্ক রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। স্বীয় অভিজ্ঞতা পরবর্তীকালে ‘দ্য গডস অয়্যার নিউট্রাল’ ও ‘ব্রাজেন চ্যারিয়টস’ শিরোনামে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেছেন। উত্তর আফ্রিকার রণাঙ্গনে বেশ সাহসিকতার পরিচয় দেন। বেশ কয়েকবার মৃত্যুমুখে পতিত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। তবে, মাথার খুলি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তার।[] যুদ্ধশেষে মিলিটারি ক্রস, ডিস্টিংগুইশড সার্ভিস অর্ডার ও চারবার চাকুরীস্থল ত্যাগের আদেশপত্র পেয়েছিলেন তিনি।[]

রমণীপ্রীতির জন্যেও তিনি সবিশেষ পরিচিতি পেয়েছিলেন ও আলেকজান্দ্রিয়ার নাইটক্লাবে অবাধ বিচরণ ছিল তার। বিভিন্ন এলাকায় ভ্রমণ করেছেন বব ক্রিস্প। এছাড়াও মাউন্ট কিলিমাঞ্জারোয় আরোহণ করেছেন ও লচ লমন্ডে সাঁতার কেটেছেন।[] একমাত্র টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে দুইবার পর্বত আরোহণ করার গৌরব অর্জন করেছেন তিনি। কর্মজীবনে সাংবাদিকতার দিকে ঝুঁকে পড়েন, উইজডেন ও বিভিন্ন সংবাদপত্রে লেখেন তিনি।[] কৃষ্ণাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদেরকে সহযোগিতাকল্পে ড্রাম প্রতিষ্ঠা করেন, গ্রিসে নৌকাচালনা করেন, ইংল্যান্ডে জলে ডুব দেন ও ইস্ট অ্যাংলিকান ডেইলি টাইমসে লেখেন।[]

১৯৭০-এর দশকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। বছরব্যাপী ক্রিটে পদচালনায় অংশ নেন। জীবন রক্ষাকল্পে সানডে এক্সপ্রেসে রচিত গ্রন্থস্বত্ত্ব বিক্রয় করে দেন।[] ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর সাংবাদিকতার দিকে ঝুঁকে পড়েন ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে ঘিরে অনেকগুলো গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ করেন। বর্ণবৈষম্যবাদের বিরুদ্ধ বেশ সোচ্চার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানকালে ১৯৯৪ সালে মৃত্যুর পূর্বে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে দেশটিকে দেখতে পান।[]

রচনাসমগ্র

[সম্পাদনা]
  • The Gods Were Neutral: A British Tank Officer's Very Personal Account of the Ill-Fated Greek Campaign in WWII, 1959 ওসিএলসি 5926883
  • Brazen Chariots: An Account of Tank Warfare in the Western Desert, November–December 1941, 1959, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৩৯৩-৩২৭১২-০
  • The Outlanders: The Men Who Made Johannesburg, 1964, ওসিএলসি 829366181
  • Zen and the Art of Donkey Maintenance, 2015, Bloomsbury আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪৪৮২-১৫২৩-২ compiled from his travel journalism serialised in the Daily Express in the 1960s and 1970s.

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Player Profile: Bob Crisp"। Cricket Archive। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০০৯(সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য)) 
  2. "First-class Bowling in Each Season by Bob Crisp"। Cricket Archive। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০০৯(সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য)) 
  3. Firth, David (ডিসেম্বর ২০০৯)। "Survival of the fastest"। Wisden Cricketer। Wisden। 7 (4): 14। 
  4. "Vijay Cricket's darkest day"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৭ 
  5. "Test Bowling in Each Season by Bob Crisp"। Cricket Archive। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০০৯(সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য)) 
  6. "Player Profile: Bob Crisp"। CricInfo। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০০৯ 
  7. Frindall, Bill (২০০৯)। Ask BeardersBBC Books। পৃষ্ঠা 135আইএসবিএন 978-1-84607-880-4 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

ইঙ্গ-ভারতীয় বংশোদ্ভূত দক্ষিণ আফ্রিকান