বৃষ্টিচ্ছায়
বৃষ্টিচ্ছায় হ'ল একটি পার্বত্য অঞ্চলের অনুবাত ঢালের দিকের শুষ্ক অঞ্চল (বাতাস থেকে দূরে)। পর্বতমালা, বৃষ্টি উৎপাদনকারী আবহাওয়া ব্যবস্থাকে অতিক্রম করতে না দিয়ে তার "ছায়া" হিসাবে একটি শুষ্ক অংশ (পর্বত) পিছনের দিকে পাঠিয়ে দেয়। বায়ু এবং আর্দ্র বায়ু প্রবাহিত হ'য়ে পাহাড়ের শীর্ষে পৌঁছে, যেখানে সেই শীর্ষ অতিক্রম করার আগে ঘনীভূত হ'য়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। বাতাস, যথেষ্ট আর্দ্রতা-ছাড়া হ'য়ে, পর্বত অতিক্রম ক'রে অগ্রসর হওয়ার সময় "বৃষ্টিচ্ছায়" নামক একটি শুষ্কতর দিক তৈরি করে।
বর্ণনা
[সম্পাদনা]এই অবস্থার সৃষ্টি হয় কারণ, উষ্ণ আর্দ্র বায়ু অরোগ্রাফিক উত্তোলন-এর ফলে পর্বতমালার শীর্ষে উঠে যায়। ক্রমবর্ধমান উচ্চতার সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ হ্রাস পেতে থাকার জন্য, বায়ু প্রসারিত হয় এবং রুদ্ধতাপীয় ঠান্ডা বিন্দুতে গিয়ে, বাতাস তার রুদ্ধতাপীয় শিশির বিন্দুতে পৌঁছোয়। প্রসঙ্গত, সাধারণত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে যে ধ্রুব চাপ শিশির বিন্দুর উল্লেখ থাকে, তার সাথে এই রুদ্ধতাপীয় শিশির বিন্দু এক নয়। এই রুদ্ধতাপীয় শিশির বিন্দুতে, আর্দ্রতা, পাহাড়ের উপর ঘনীভূত হয় এবং পর্বতের শীর্ষে প্রতিবাত বা বাতাসের দিকের ঢালে বৃষ্টিপাত ঘটায়। এরপর অনুবাত ঢাল বরাবর বাতাসের অবতরণের সময় আগেই প্রতিবাত ঢালে বৃষ্টিপাত ঘটানোর কারণে, তার আর্দ্রতা অনেকটাই হারিয়ে ফেলে। সাধারণত, পর্বতের অনুবাত ঢালে বাতাস নীচে নামার সময় রুদ্ধতাপীয় সংঙ্কোচন (দেখুন ফোহেন বাতাস) এর কারণে উষ্ণতর হ'তে থাকে। এর ফলে তার আর্দ্রতার শোষণ বেড়ে যায় এবং সেখানে একটি শুষ্ক অঞ্চল তৈরি করে। [১]
উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল
[সম্পাদনা]পৃথিবীর নিরক্ষ অঞ্চলকে ঘিরে নিয়মিত ধরনের বাতাস নিয়ন্ত্রক নিদর্শন পাওয়া যায়। প্রায় ৩০° N এবং ৩০° S এর মধ্যবর্তী অংশে, মূলত উত্তর গোলার্ধ-এ উত্তর-পূর্ব দিক এবং দক্ষিণ গোলার্ধ-এ দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে বাণিজ্য বাতাস প্রবাহিত হয়। পশ্চিমা হ'ল ৩০ থেকে ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশ-এর মধ্যবর্তী অক্ষাংশ-এ অবস্থান করা বাতাস, যা মূলত উত্তর গোলার্ধের দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়। মধ্য অক্ষাংশের সবচেয়ে শক্তিশালী পশ্চিমা বাতাস ৩০ থেকে ৫০ ডিগ্রি অক্ষাংশের মধ্যে গর্জনশীল চল্লিশায় আসতে পারে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
কিছু উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলের উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে:
এশিয়া
[সম্পাদনা]- সাহ্যাদ্রীর পূর্ব দিকের দাক্ষিণাত্য মালভূমি। এর অন্তর্ভুক্ত: উত্তর কর্ণাটক এবং সোলহাপুর, বিদ, ওসমানাবাদ , বিদর্ভ মালভূমি এবং কেরালার পূর্ব দিক ও ভারতের পশ্চিম তামিলনাড়ু।
- গিলগিট এবং চিত্রাল, পাকিস্তান, বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল।
- পশ্চিমে ককেশাস পর্বতমালার শিখর এবং পূর্বদিকে হিন্দুকুশ ও পামির এর বৃষ্টিচ্ছায় কারাকুম এবং ক্যাস্পিয়ান সাগর এর পূর্ব দিকের কিজিল কুম মরুভূমি, তার পাশাপাশি আধা-শুষ্ক স্টেপ্প।
- ইরানের এলবুর্জ এবং জাগ্রোস পর্বতমালার বৃষ্টিচ্ছায় দাস্ত-ই-লুট; এটি পৃথিবীর অন্যতম প্রাণহীন অঞ্চল।
- হিমালয় ও তার সংযুক্ত পর্বতশ্রেণীগুলির কারণে মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমি এবং তার পাশাপাশি মঙ্গোলিয়া ও উত্তর-মধ্য থেকে উত্তর-পশ্চিম চীনের আধা-শুকনো স্টেপের পরিস্থিতি শুষ্ক প্রকৃতির।
- অরদোস মরুভূমি বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে অবস্থিত। পর্বতশ্রেণী কারা-নারুন-উলা, শীটেনুলা এবং ইয়িন পর্বতমালা, যা আবার গ্রেট খিংগান পর্বতমালার দক্ষিণ প্রান্তে সংযুক্ত রয়েছে। এসব দিয়ে আবদ্ধ ঐ বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলটি।
- দক্ষিণ-পূর্ব দিকে আরাবল্লী, উত্তর-পূর্ব দিকে হিমালয় এবং পশ্চিমে কীর্তার ও সুলেইমান পর্বতশ্রেণী বেষ্টিত থর মরুভূমি টি বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল।
- মায়ানমার এর কেন্দ্রীয় অঞ্চলটি আরাকান পর্বতমালার বৃষ্টিচ্ছায়। এই অংশটিও প্রায় শুষ্ক, বৃষ্টিপাত মাত্র ৭৫০ মিলিমিটার (৩০ ইঞ্চি)। অন্য দিকে উপকূলে রাখাইন রাজ্য-এ বৃষ্টিপাত ৫.৫ মিটার (২২০ ইঞ্চি)।
- শীতকালে জাপানের সমভূমিতে ("ক্যান্তো সমভূমি") অবস্থিত টোকিও, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম বৃষ্টিপাতের অভিজ্ঞতা লাভ করে। কারণ, "জাপান আল্পস" সহ পার্শ্ববর্তী পর্বতশ্রেণী, সাইবেরিয়ার উৎপন্ন উত্তর-পশ্চিম দিকের বাতাসকে অবরুদ্ধ করে দেয়।
- পূর্ব সাইবেরিয়ার ভার্খোয়ানস্ক পর্বতশ্রেণী হ'ল উত্তর গোলার্ধ-এর শীতলতম জায়গা। কারণ প্রশান্ত মহাসাগর থেকে আর্দ্র দক্ষিণপূর্ব বায়ু, লেনা নদী উপত্যকায় পৌঁছোবার আগেই, শীতকালের খুব শীতল মহাদেশীয় বাতাসের চারদিকে গঠিত তীব্র সাইবেরিয়ান চাপ-এর কারণে, উপকূলীয় পর্বতে আর্দ্রতা হারায়। তার ফলে, সাখা প্রজাতন্ত্র (ইয়াকুটিয়া) এর উপরে তার একটি প্রভাব পড়ে। সেটি হ'ল, ইয়াকুটস্ক, ভারখোয়ানস্ক এবং ওমাইয়াকন -এ শীতলতম মাসের গড় তাপমাত্রা হয় −৩৮ °সে (−৩৬ °ফা)। এই অঞ্চলগুলি চরম শীতের সমার্থক।
- পর্বতশৃঙ্গ, উত্তর দিকের পন্টিক পর্বত এবং দক্ষিণ দিকের টেরাস পর্বত-এর দ্বারা অর্ধ-শুষ্ক বৃষ্টিচ্ছায় হ'ল আনাতোলিয়ান মালভূমি।
- লেবানন পর্বত এর উচ্চ শিখর সৃষ্ট বৃষ্টিচ্ছায় হ'ল বেগা উপত্যকা এবং অ্যান্টি-লেবান পাহাড়।
- জুডিয়ান পর্বত-এর বৃষ্টিচ্ছায় হ'ল জুডিয়ান মরুভূমি, মৃত সাগর এবং (জর্ডান)-এর বিপরীত দিকে পশ্চিম ঢালের মোয়াব পর্বত।
দক্ষিণ আমেরিকা
[সম্পাদনা]- চিলির আতাকামা মরুভূমি পৃথিবীর শুষ্কতম অ-মেরু মরুভূমি। কারণ এখানে উভয় দিক থেকেই আদ্রতা ঢুকতে বাধা পায়। আন্দিজ পর্বতমালা পূর্ব দিক থেকে অ্যামাজন অববাহিকার বাতাসের আদ্রতা আসা থেকে বিরত রাখে এবং চিলিয়ান কোস্ট রেঞ্জ পশ্চিম দিক থেকে মহাসাগরীয় প্রভাব আসা থেকে বিরত রাখে।
- ক্যুয়ো এবং পূর্ব পাটাগোনিয়া বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল। আন্দিজ-এর উচ্চতা কমার সাথে সাথে, তার পূর্ব পাদদেশের পাশের জমির শুষ্কতাও দক্ষিণে হ্রাস পায়। ফলে আটলান্টিক উপকূলীয় জলবায়ুর নিদর্শন গঠনে অবদান রাখে। আর তারই ফলে প্যাটাগোনিয়ান মরুভূমি আরও পুরোপুরি বিকাশ লাভ করেছে, যা শুকনো ডায়াগোনাল নামে পরিচিত।[২] ক্যুয়ো এবং উত্তর প্যাটাগোনিয়ার আর্জেন্টিনিয়ান ওয়াইন অঞ্চলটি পুরোপুরি সেচের উপর নির্ভরশীল। আন্দিজ-এর হিমবাহ নিসৃত বরফ গলা জলে পুষ্ট বহু নদী থেকে নেওয়া জল ব্যবহার করে এই সেচের কাজ চলে।
- উত্তর কলম্বিয়ার গুয়াজিরা উপদ্বীপ, সিয়েরা নেভাদা দে সান্তা মার্তার একটি বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল। এর ক্রান্তীয় অক্ষাংশ প্রায় শুষ্ক। বছরের সাত থেকে আট মাস প্রায় বৃষ্টিপাত হয় না এবং সেচ ছাড়া সেখানে কৃষি কাজ অসম্ভব।
উত্তর আমেরিকা
[সম্পাদনা]বৃহত্তর ক্ষেত্রে, উত্তর আমেরিকার আভ্যন্তরীণ সমতল পুরোপুরি উত্তর আমেরিকান কর্ডিলেরা পর্বত দ্বারা প্রশান্ত মহাসাগরের বহু পরিচিত পশ্চিমা থেকে রক্ষা পেয়েছে। কর্ডিলেরার মধ্যে নির্দিষ্ট উপত্যকার অঞ্চলগুলিতে নির্দিষ্ট পর্বতমালার প্রত্যক্ষ ফাঁকে আরও স্পষ্ট করে প্রভাব দেখা যায়। পশ্চিম ইউনাইটেড স্টেটস-এর বেশিরভাগ বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল সিয়েরা নেভাডা এবং ক্যাসকেডস কারণে হয়েছে।[৩]
- ইউনাইটেড স্টেটস এবং মেক্সিকোর অববাহিকা এবং রেঞ্জ প্রদেশ-এর মরুভূমিতে ওরেগন এবং ওয়াশিংটন-এর ক্যাসকেড পর্বত-এর পূর্ব দিকের শুষ্ক অঞ্চল এবং গ্রেট বেসিন, যার মধ্যে নেভাদার প্রায় পুরো অঞ্চল এবং উটাহর কিছু অংশ বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলের অন্তর্গত। ক্যাসকেড পর্বতের কারণে কলম্বিয়া অববাহিকার পূর্ব ওয়াশিংটনও বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল এবং কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া উপত্যকায় বৃষ্টিপাত ঘটে - বিশেষ করে থমসন এবং নিকোলা উপত্যকায় ১০ ইঞ্চিরও কম এবং ওকানাগান উপত্যকা (বিশেষ করে দক্ষিণে,মার্কিন সীমানার কাছে) কোনও কোনও জায়গায় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১২-১৭ ইঞ্চি।[৪][৫]
- দক্ষিণ দিকের সান জোয়াকুইন উপত্যকার কারণে, মধ্য এবং দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূল অঞ্চলে বেকারসফিল্ড-এর আশেপাশের অঞ্চলে যথেষ্ট পরিমাণ বৃষ্টিপাত হতে বাধা পায়। তাই ঐ অঞ্চলের পরিস্থিতি মরুভূমির মতো।
- সান জোসে, ক্যালিফোর্নিয়া এবং তার সংলগ্ন শহরগুলি সাধারণত সান ফ্রান্সিসকো উপসাগর এলাকার বাকি অংশগুলির চেয়ে শুষ্ক। তার কারণ, ঐ এলাকাগুলি সান্তা ক্রুজ পর্বত-এর জন্য বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল।
- ওয়াশিংটন-এর সিক্যোয়েম-এর আশেপাশের ডুঙ্গেনেস ভ্যালি জুড়ে ওলিম্পিক পর্বত বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে অবস্থিত। অঞ্চলটিতে প্রতি বছর গড়ে ১০-১৫ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়। কাছাকাছি পোর্ট অ্যাঞ্জেলেসে-এর থেকে পরিমাণে অর্ধেকেরও কম। কিছুটা হলেও এই বৃষ্টিচ্ছায়ের অংশ পূর্ব অলিম্পিক উপদ্বীপের অন্যান্য অংশ, হুইডবে দ্বীপপুঞ্জ এবং সান জুয়ান দ্বীপপুঞ্জের কিছু অংশ এবং ভিক্টোরিয়া, ব্রিটিশ কলম্বিয়ার আশেপাশের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ভ্যানকুভার দ্বীপ-এও প্রসারিত।
- মোজাভে, ব্ল্যাক রক, সোনোরান এবং চিহুয়াহান মরুভূমি, সবগুলিই এমন অঞ্চলে অবস্থিত যেগুলি বৃষ্টিচ্ছায়যুক্ত।
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েনস ভ্যালি-টিও ক্যালিফোর্নিয়ার সিয়েরা নেভাডা পর্বতশ্রেণীর পিছনে অবস্থিত।
- ক্যালিফোর্নিয়ার প্যাসিফিক কোস্ট রেঞ্জ এবং সিয়েরা নেভাডা, এই উভয় পর্বতশ্রেণীর পিছনে অবস্থিত, আমেরিকার ডেথ ভ্যালি হ'ল উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে শুষ্কতম স্থান এবং গ্রহের সবচেয়ে শুকনো জায়গা। এটি সমুদ্রতল থেকে নীচে অবস্থানের কারণে বায়ুমণ্ডলের উচ্চতর চাপে অঞ্চলটিতে চাপ ও শুষ্কতা প্রাধান্য পেয়েছে।
- কলোরাডো ফ্রন্ট রেঞ্জ-এর জন্য বৃষ্টিপাত কন্টিনেন্টাল ডিভাইড-এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। ডিভাইডের পশ্চিমে অনেকগুলি স্থানেই বাৎসরিক বৃষ্টিপাত ৪০ ইঞ্চি (১,০০০ মিমি) হতে পারে। পূর্ব দিকে কিছু জায়গা, বিশেষত ডেনভার এবং পুয়েব্লো, কলোরাডোশহরগুলিতে সাধারণত প্রায় ১২ থেকে ১৯ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়। সুতরাং, কন্টিনেন্টাল ডিভাইড বৃষ্টিপাতের জন্য বাধা হিসাবে কাজ করে। এই প্রভাবটি কেবল পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘটা ঝড়গুলির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যখন দক্ষিণ থেকে আগত নিম্নচাপ রকি পর্বত-এর কিনারায় পৌঁছোয়, তখন তার প্রভাবে পূর্ব দিকে উচ্চ বৃষ্টিপাত ঘটতে পারে। কিন্তু পশ্চিম ঢালে সামান্য অথবা কোনও বৃষ্টিপাত হয় না।
- ভার্জিনিয়ার শেনানডোহ উপত্যকা, রিজ-অ্যান্ড-ভ্যালি অ্যাপালাচিয়ানস এবং ব্লু রিজ পর্বত-এর মধ্যে আবদ্ধ অঞ্চল আংশিকভাবে পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকের আর্দ্রতা থেকে রক্ষা পায়। ফলে, ভার্জিনিয়া এবং আমেরিকার দক্ষিণ-পূর্বের খুব আর্দ্র অংশের চেয়ে ঐ অঞ্চল অনেক শুষ্ক হয়।[৬]
- কানাডার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলগুলির রাজধানী এবং সর্বাধিক জনবহুল শহর ইয়েলোনাইফ, পশ্চিম দিকের পর্বতমালার বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে অবস্থিত।
- পুয়ের্তো রিকো, হিস্পানিয়োলা, কিউবা এবং জামাইকা প্রভৃতি দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকগুলি বাণিজ্য বাতাসের বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে রয়েছে। ফলে সেখানে বছরে বৃষ্টিপাত ৪০০ মিলিমিটার (১৬ ইঞ্চি)। এর বিপরীতে উত্তর-পূর্বে প্রতিবাত দিকে বছরে বৃষ্টিপাত ২,০০০ মিলিমিটার (৭৯ ইঞ্চি)। কিছু উচ্চভূমি অঞ্চলে তা ৫,০০০ মিলিমিটার (২০০ ইঞ্চি) এর উপরেও হয়।
ইউরোপ
[সম্পাদনা]উত্তর ইংল্যান্ডের পেনাইন, ওয়েলশ পর্বতমালা, লেক ডিস্ট্রিক্ট এবং স্কটল্যান্ডের উচ্চভূমি একটি বৃষ্টিচ্ছায় তৈরি করেছে। এর বেশিরভাগ অংশই পূর্ব যুক্তরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। প্রচলিত দক্ষিণ-পশ্চিমের বাতাসের কারণেই এটি ঘটেছে। উদাহরণ হিসাবে, ম্যানচেস্টার এবং গ্লাসগোতে যথাক্রমে শেফিল্ড এবং এডিনবার্গ-এর দ্বিগুণ বৃষ্টিপাত হয় (যদিও এডিনবার্গ এবং গ্লাসগোয়ের মধ্যে কোনও পর্বত নেই)। বৈসাদৃশ্যটি উত্তরে আরও শক্তিশালী। সেখানে আবেরডিন-এ ফোর্ট উইলিয়াম বা স্কাই (Skye)-এর এক তৃতীয়াংশ বৃষ্টিপাত হয়। ফেনস অফ ইস্ট অ্যাঞ্জেলিয়া এবং সেভিলিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ একই রকম।[৭]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Whiteman, C. David (২০০০)। Mountain Meteorology: Fundamentals and Applications। Oxford University Press। আইএসবিএন 0-19-513271-8।
- ↑ Bruniard, Enrique D. (১৯৮২)। "La diagonal árida Argentina: un límite climático real"। Revista Geográfica (Spanish ভাষায়): 5–20।
- ↑ "How mountains influence rainfall patterns"। USA Today। ২০০৭-১১-০১। ২০১১-০৭-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-২৯।
- ↑ Glossary of Meteorology (২০০৯)। "Westerlies"। American Meteorological Society। ২০১০-০৬-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৫।
- ↑ Sue Ferguson (২০০১-০৯-০৭)। "Climatology of the Interior Columbia River Basin" (পিডিএফ)। Interior Columbia Basin Ecosystem Management Project। ২০০৯-০৫-১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৯-১২।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ৩ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০।
- ↑ "UK Rainfall averages"। ২০১০-০২-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।