স্মিউ হাঁস
স্মিউ হাঁস Mergellus albellus | |
---|---|
পুরুষ (উপরে) ও স্ত্রী স্মিউ হাঁস | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণীজগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | আন্সেরিফর্মিস |
পরিবার: | অ্যানাটিডি |
উপপরিবার: | Merginae |
গণ: | Mergellus Selby, ১৮৪০ |
প্রজাতি: | M. albellus |
দ্বিপদী নাম | |
Mergellus albellus (লিনিয়াস, ১৭৫৮) | |
Range of M. albellus Breeding Non-breeding Passage | |
প্রতিশব্দ | |
|
স্মিউ হাঁস (Mergellus albellus) (ইংরেজি: Smew) Anatidae (অ্যানাটিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Mergellus (মেরগেলাস) গণের একমাত্র প্রজাতি।[১] স্মিউ হাঁস একপ্রজাতিক, অর্থাৎ এর কোন উপপ্রজাতি নেই। স্মিউ হাঁসের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ সাদা জলার পাখি (ল্যাটিন mergus = জলার পাখি, প্লিনির উল্লেখ অনুযায়ী; ল্যাটিন albus = সাদা)।[১] সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের আবাস, প্রায় ১৯ লাখ বর্গ কিলোমিটার।[২] গত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা কমে গেলেও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছায় নি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা ন্যুনতম বিপদযুক্ত বলে ঘোষণা করেছে।[৩] বাংলাদেশে এরা পরিযায়ী হয়ে আসে। বাংলাদেশের ১৯৭৪[১] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৪] সমগ্র পৃথিবীতে আনুমানিক ১ লক্ষ ৩০ হাজারের কম স্মিউ হাঁস রয়েছে।[২]
বিস্তৃতি
[সম্পাদনা]স্মিউ হাঁস ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিস্তৃত। এদের মূল আবাস রাশিয়া ও তদসংলগ্ন তুন্দ্রা অঞ্চল। এছাড়া ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, চীন ও জাপানে এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে। বাংলাদেশে এরা অনিয়মিত পরিযায়ী স্বভাবের।[১][৩]
বিবরণ
[সম্পাদনা]স্মিউ হাঁস বর্গাকার মাথাওয়ালা মাঝারি আকৃতির হাঁস। ঠোঁট মাথার চেয়ে ছোট, ক্রমশ সরু, ঠোঁটের প্রান্তের কাঁটাটি বড়শির মত। এদের দৈর্ঘ্য কমবেশি ৪৬ সেন্টিমিটার, ডানা ১৯ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ৩ সেন্টিমিটার, পা ৩ সেন্টিমিটার ও লেজ ৭.৫ সেন্টিমিটার। ওজন ৬৮০ গ্রাম।[১] প্রজনন মৌসুমে স্ত্রী ও পুরুষ হাঁসের মধ্যে পার্থক্য বিস্তর। এসময় পুরুষ হাঁসের ঠোঁটের গোড়া ও চোখের মাঝামাঝি অংশ কালো রঙের হয়। ঘাড়ে কালো ছোপ থাকে। মাথায় ঝোলানো ঝুঁটি সাদা, সাথে সাথে সারা দেহ সাদা। ডানা কালচে ও বুকের পাশে কালো দাগ থাকে। দেহের পাশ ও লেজ ধূসর। চোখ লালচে। ঠোঁট, পা ও পায়ের পাতা ধূসর বর্ণের। স্ত্রী হাঁসের তামাটে-লাল টুপি থাকে। ঘাড় ও টুপি ছাড়া শরীরের উপরিভাগ কালচে-ধূসর দেখায়। গলা সাদা ও পেট সাদাটে। সাদাটে নখর সমেত ঠোঁট সীসা ও ধূসর রঙে মেশানো। কালো পায়ের পর্দাসহ পা ও পায়ের পাতা সবুজ। প্রজনন ঋতু ছাড়া পুরুষ হাঁস পুরোপুরি স্ত্রী হাঁসের মত, কেবল পেছন দিক কালো ও ডানার মধ্য-পালকের উপর সাদা পট্টি দেখা যায়। অপ্রাপ্তবয়স্ক হাঁস হালকা রঙের হয়।[১]
স্বভাব
[সম্পাদনা]স্মিউ হাঁস মৎস্যসম্বৃদ্ধ হাওর, বিল, নদী, হ্রদ, এমনকি সমুদ্র উপকূল ও বড় জলাধারে ছোট ছোট দলে বিচরণ করে। বদ্ধ বড় জলাশয় এদের বেশি পছন্দ। প্রধানত দিবাচর। রাতের বেলা বিশ্রাম নেয়। পানির তলে ডুব দিয়ে এরা খাবার খোঁজে, ১-৪ মিটার পর্যন্ত ডুব দিতে পারে।[৩] আহার্য তালিকায় রয়েছে চিংড়ি ও শামুক-জাতীয় প্রাণী, জলজ পোকামাকড়, লার্ভা, কেঁচো, ব্যাঙ, লতাপাতা ও জলজ উদ্ভিদাংশ। শীতকালে ও বসন্তের শুরুতে প্রধানত মাছ খায়। মুহুর্মুহু সূঁচালো ডানা চালিয়ে এরা দ্রুত শব্দহীনভাবে ওড়ে। প্রজনন ঋতু ছাড়া সাধারণত নীরব থাকে। কদাচ ব্যাঙের মত নিচু গলায় ডাকে অথবা শিস দেয়। প্রজনন কালের পরে পুরুষ হাঁসেরা কিছু সময়ের জন্য উড়তে পারে না, কারণ এসময় এদের পালক পরিবর্তিত হয়। এসময় এরা দলবদ্ধভাবে বিচরণ করে।[৩]
প্রজনন
[সম্পাদনা]এপ্রিল থেকে মে স্মিউ হাঁসের প্রধান প্রজনন ঋতু। সাইবেরিয়া ও এর আশেপাশের অঞ্চল এদের মূল প্রজননস্থল। এসময় গাছের প্রাকৃতিক কোটরে বা কৃত্রিম বাক্সে বাসা তৈরি করে ৭-৯টি ডিম পাড়ে। ডিম গুলো পীতাভ বা হালকা পীতাভ বর্ণের। ডিমের মাপ ৫.২ × ৩.৭ সেন্টিমিটার। কেবল স্ত্রী হাঁস ডিমে তা দেয়। ২৬-২৮ দিন পর ডিম ফুটে ছানা বের হয়।[১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.), বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: পাখি, খণ্ড: ২৬ (ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ২০০৯), পৃ. ৩৬-৩৭।
- ↑ ক খ Mergellus albellus ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে, BirdLife International এ স্মিউ হাঁস বিষয়ক পাতা।
- ↑ ক খ গ ঘ Mergellus albellus[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], The IUCN Red List of Threatened Species এ স্মিউ হাঁস বিষয়ক পাতা।
- ↑ বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই ১০ ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা- ১১৮৪৫১
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- স্মিউ হাঁস বিষয়ক আরও তথ্য, South Dakota Bird and Birding.
- The Internet Bird Collection ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ মে ২০১৩ তারিখে, স্মিউ হাঁসের আলোকচিত্র, ভিডিও ও ডাক।
- আইইউসিএন লাল তালিকার ন্যূনতম উদ্বেগজনক প্রজাতি
- পরিযায়ী পাখি
- জলচর পাখি
- এশিয়ার পাখি
- ইউরোপের পাখি
- আফ্রিকার পাখি
- ভারতের পাখি
- বাংলাদেশের পাখি
- পাকিস্তানের পাখি
- মিয়ানমারের পাখি
- নেপালের পাখি
- চীনের পাখি
- তাইওয়ানের পাখি
- জাপানের পাখি
- উত্তর কোরিয়ার পাখি
- দক্ষিণ কোরিয়ার পাখি
- মঙ্গোলিয়ার পাখি
- হংকংয়ের পাখি
- বেলারুশের পাখি
- ইউক্রেনের পাখি
- রাশিয়ার পাখি
- যুক্তরাজ্যের পাখি
- আয়ারল্যান্ডের পাখি
- ফ্রান্সের পাখি
- বেলজিয়ামের পাখি
- জার্মানির পাখি
- নেদারল্যান্ডসের পাখি
- স্লোভেনিয়ার পাখি
- স্লোভাকিয়ার পাখি
- স্পেনের পাখি
- ডেনমার্কের পাখি
- সুইজারল্যান্ডের পাখি
- কানাডার পাখি
- পর্তুগালের পাখি
- ফিলিস্তিনের পাখি
- তিউনিসিয়ার পাখি
- সিরিয়ার পাখি
- ফিনল্যান্ডের পাখি
- নরওয়ের পাখি
- আইসল্যান্ডের পাখি
- তুরস্কের পাখি
- সৌদি আরবের পাখি
- আলবেনিয়ার পাখি
- আফগানিস্তানের পাখি
- অস্ট্রিয়ার পাখি
- আজারবাইজানের পাখি
- বুলগেরিয়ার পাখি
- ক্রোয়েশিয়ার পাখি
- চেক প্রজাতন্ত্রের পাখি
- মিশরের পাখি
- এস্তোনিয়ার পাখি
- গ্রিসের পাখি
- ইরানের পাখি
- হাঙ্গেরির পাখি
- ইরাকের পাখি
- ইতালির পাখি
- কাজাখস্তানের পাখি
- তুর্কমেনিস্তানের পাখি
- তাজিকিস্তানের পাখি
- উজবেকিস্তানের পাখি
- কিরগিজস্তানের পাখি
- লাতভিয়ার পাখি
- লিথুয়ানিয়ার পাখি
- মার্জিনি
- হাঁস
- ১৭৫৮-এ বর্ণিত পাখি
- কার্ল লিনিয়াস কর্তৃক নামকরণকৃত ট্যাক্সা